মোদির বিদায়ঘণ্টা বাজাতে একাট্টা বিরোধীরা

ই-বার্তা ডেস্ক ।। গতকাল শনিবার কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘ঐক্যবদ্ধ ভারত সমাবেশ’ নামের কর্মসূচিতে যোগ দেন দলগুলোর লক্ষাধিক নেতাকর্মী। এতে উপস্থিত বিরোধী নেতারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে ‘অন্ধকার দিন’ ডেকে এনেছেন, তার প্রতিবাদে জড়ো হয়েছেন তারা।

চলতি বছর অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়োজনে র‌্যালিতে অংশ নিয়েছেন কংগ্রেসসহ প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। 

এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, কলকাতার সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত হন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খার্গ, অভিষেক মনু সিংভী, ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক নেতা যশবন্ত সিনহা, উত্তর প্রদেশের প্রভাবশালী দল সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব, তামিলনাড়–র প্রধান বিরোধী দল দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাজাগামের (ডিএমকে) সভাপতি এম. কে. স্টালিন, অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তেলেগু দেশম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু, হরিয়ানাভিত্তিক লোকতান্ত্রিক জনতা দলের (এলজেডি) প্রধান শারদ যাদব, জম্মু-কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের (জেকেএনসি) চেয়ারপারসন ফারুক আবদুল্লাহ, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রধান শারদ পাওয়ার প্রমুখ।

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী গতকালের সমাবেশে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে গত শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতার কাছে চিঠি দিয়ে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন তিনি।

সমাবেশের সমাপনী বক্তব্যে তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনার সময় এখন নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা এটা পরে ঠিক করব। সময়ের দাবি হলো নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপিকে পরাজিত করা।’

মোদি সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে মন্তব্য করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ লুট করে বিজেপি এখন ব্যাকফুটে।

তেলেগু দেশম পার্টির চন্দ্রবাবু নাইডু অভিযোগ করে বলেন, দেশসেবায় প্রধানমন্ত্রী মোদি কাজের চেয়ে কথায় এগিয়ে। তিনি বলেন, ‘এই প্রধানমন্ত্রী প্রচারস্বর্বস্ব প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আমরা একজন কাজের প্রধানমন্ত্রী চাই।’

অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিজেপি জনসম্পদ গড়ে তোলা, ঋণসুবিধা দেওয়া, সুশাসন, স্মার্ট সিটি, দুই কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তার একটিও কি বাস্তবায়ন করেছে?’

কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খার্গ বলেন, মোদি প্রতি বছর দুই কোটি কর্মসংস্থানের কথা বললেও বাস্তবে তিনি বিদ্যমান কর্মক্ষেত্রগুলো ধ্বংস করেছেন। তিনি বলেন, ‘কৃষক ও দলিতরা মারা যাচ্ছে; বেকারত্ব বাড়ছে। অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ রক্ষা করতে আমাদের একত্রিত হতে হবে। আমাদের একত্রে চলতে হবে।’

দিল্লিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেন, বিজেপির কিছু অর্জন থাকলেও তাদের আচরণ সন্দেহজনক। তিনি বলেন, ‘গত ৭০ বছরে পাকিস্তান যা করতে পারেনি, নরেন্দ্র মোদির সরকার পাঁচ বছরে তা করেছে। এটি (সরকার) সমাজকে বিভক্ত করেছে, এক ধর্মকে অন্যের মুখোমুখি করেছে। আর এ কারণেই মোদি-শাহর অংশীদারি থেকে আমাদের মুক্ত হওয়া দরকার।’

অসম কিছু পক্ষ মিলে যে মহাজোট হয়েছে, তা একক কোনো নেতৃত্ব পাবে না বলে বিজেপি যে অভিযোগ করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, ‘আজ আমি তাদের বলব, জনগণই নেতা বেছে নেবেন। তোমাদের জোটেও অনেক পক্ষ আছে, যাদের মধ্যে সিবিআই (সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) ও ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেকটোরেট) রয়েছে। কিন্তু আমরা জনগণের সঙ্গে জোট করেছি।’

 

ই-বার্তা /  তামান্না আলী প্রিয়া