যা কিছু ছিল সব লুটপাট করে নিয়ে গেছেঃ তসলিমা নাসরিন

ই-বার্তা ।।  আলোচিত ও সমালোচিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ‘আনন্দ পুরস্কার’ পাওয়া সোনার লেখাসহ রুপার থালা চুরি হয়ে গেছে। ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি এ লেখিকা সোমবার (২৯ এপ্রিল) থালা চুরি হওয়া নিয়ে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘আনন্দ পুরস্কার দু’বার পেয়েছিলাম। ১৯৯২ সালে নির্বাচিত কলাম আর ২০০০ সালে আমার মেয়েবেলা বইয়ের জন্য। দু’বারের টাকা আর যে লোকই করুক, আমার ভোগ করা হয়নি। আর সোনার লেখাসহ দুটো রুপার থালা? চুরি হয়ে গেছে। আর ওই রুপার দুটো দণ্ডতে পেঁচানো তসরের কাপড়ে লেখা অসাধারণ সেই আনন্দ অভিনন্দন বার্তা? ওটির একটি আছে শুধু, আরেকটি নেই। কোথায়? চুরি হয়ে গেছে। কলকাতার আর দিল্লির বাসভবন থেকেই। ঘরের কাজে সাহায্য করার জন্য যত মেয়েকে রেখেছি, পোষা বেড়ালকে খাওয়াবে বলে যাকেই রেখে দেশের বাইরে গেছি, তারাই আমার টাকা-পয়সা হীরে, সোনা, রুপা বা দামি যা কিছু ছিল সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে।

তিনি লিখেন, ইউরোপে যে বাড়িতে ছিলাম, ২৪ বছর আগে যেভাবে রেখেছিলাম জিনিসপত্র, সেভাবেই পড়ে আছে সব, কিছুই খোয়া যায়নি। কিন্তু ভারতবর্ষে সব শখের জিনিস, স্মৃতির জিনিস দিয়ে ঘর সাজিয়ে এখন দেখি সব হারিয়ে ফুরিয়ে বসে আছি। ঢাকার বাড়িরও একই অবস্থা। নেই কিছু। পুরনো কত ছোট ছোট জিনিস কত কিছু মনে করিয়ে দেয়। এখন তো সিন্দুক খুলে বসার বয়স। একটি একটি করে হাতে নেব নেপথলিনের গন্ধমাখা সেই সব পুরনো চিঠিপত্র, পুরনো ফটো…।

দু’দিন আগে আনন্দ পুরস্কার অনুষ্ঠান হলো। ভাবছিলাম এখনও কি সোনায় লেখা রুপার থালা দেয় ওরা? থালার ওপর জুঁই ফুলের মালা?

থালার জন্য দীর্ঘশ্বাস ফেলে কী লাভ! সব ফেলে চলেই তো যেতে হবে একদিন। এইসব বস্তুর কী মূল্য! যত দিন বাঁচি, কেবল যা দেখিনি তা দেখব। পেছনে তো পড়েই থাকে অর্থকড়ি, স্বীকৃতি।

লুটপাট কারা করেছে, অনুমান করেছি। কিন্তু কাউকে কোনও প্রশ্ন করিনি। কারও কাছ থেকে কিছু ফেরত আনতে যাইনি। ওগুলো বিক্রি করে দিয়েছে নিশ্চয়ই। নিশ্চয়ই খুব টাকার দরকার ওদের। এই দুনিয়ায় কারও বেশি থাকবে, কারও কম থাকবে, তা কেন ওরা হতে দেবে! হয়তো ঠিকই করেছে।