যেভাবে জনপ্রিয় ৫ খাবারের জন্ম

ই-বার্তা ডেস্ক।। চুইংগাম চিবোতে চিবোতে কখনো কি মনে হয়েছে, দাঁতে দাঁতে পিষ্ট হওয়া খাবারের জন্মটা কীভাবে? শুধুই চুইংগামের কথাইবা কেন, প্রায় প্রতিটি খাবার প্রচলনের পেছনেই তো রয়েছে কোনো ঘটনা। এবার জানুন তেমনই পাঁচটি খাবারের উৎপত্তি-কাহিনি। জনপ্রিয় ৫ খাবারের জন্ম যেভাবে

*চুইংগাম

উত্তর আমেরিকায় রেড ইন্ডিয়ানদের হাতেই বলা যায় আধুনিক চুইংগামের আবির্ভাব। সেকালে রেড ইন্ডিয়ানরা ফারগাছের আঠালো রসের তৈরি একধরনের চুইংগ্রাম চিবোতেন। ইউরোপীয়রা উত্তর আমেরিকায় উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউরোপীয়দের মধ্যেও এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এ ছাড়া প্রাচীনকালে মায়া এবং অ্যাজটেক সভ্যতার যুগেও চুইংগাম ছিল বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ১৮৪০–এর দশকের দিকে মার্কিন ব্যবসায়ী জন কার্টিস ফারগাছের আঠালো রসকে গরম করে সেগুলো সমান করে কেটে ভুট্টার মাড় দিয়ে মুড়িয়ে প্রথম চুইংগাম বাজারজাত করেন।

*স্যান্ডউইচ

যুক্তরাজ্যের পূর্ব উপকূলের কেন্ট অঞ্চলের ঐতিহাসিক শহর স্যান্ডউইচ। এই শহরেরই বাসিন্দা আর্ল জন মন্টেগুর ছিল জুয়া খেলার নেশা। একবার জুয়ার আসরে বসলে তাঁকে ওঠানোই যেত না। তাঁর নাওয়াখাওয়া সবই হতো জুয়ার আসরে। ক্ষুধা পেলেই দুটো পাউরুটি খেয়ে নিতেন তিনি। একদিন তিনি তাঁর রাঁধুনিকে বলে দিলেন এখন থেকে দুটো পাউরুটির মাঝখানে গরুর মাংস দিয়ে পরিবেশন করতে। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, স্যান্ডউইচের শুরুটাও সেখান থেকেই, তাই খাবারের নাম স্যান্ডউইচ এলাকার নামেই। সেটা অষ্টাদশ শতকের কথা।

*কোন আইসক্রিম

যদিও কোন আইসক্রিমের উদ্ভাবন হয়েছিল ১৮৯৬ সালে ইতালো মার্কিওনির হাত ধরে। কিন্তু একে জনপ্রিয় করেন আর্নেস্ট হামভি। আর্নেস্ট হামভির ছিল পেস্ট্রির দোকান, যার পাশেই ছিল একটি আইসক্রিমের দোকান। আইসক্রিমের জনপ্রিয়তা দেখে আর্নেস্ট হামভির মনে হলো, কেমন হয় যদি এই আইসক্রিমগুলোকে তাঁর পেস্ট্রির এক কোণে রেখে পরিবেশন করা হয়? যেই ভাবা সেই কাজ। ছোট ছোট কোন বানিয়ে তিনি দিলেন তাঁর প্রতিবেশীকে। বদলে যায় আইসক্রিমের ইতিহাসই।

*মেয়নিজ

কথিত আছে, ১৭৫৬ থেকে ১৭৬৩ সাল পর্যন্ত চলা সাত বছরের যুদ্ধের সময় যে ফরাসি বাহিনী স্পেনের মাহোন বন্দর দখল করেছিল, তাদের এক রাঁধুনিই আবিষ্কার করেন মেয়নিজ। অবশ্য এ নিয়ে ভিন্নমত আছে। স্পেনের বাসিন্দাদের মতে, মাহোন বন্দরে মেয়নিজের উৎপত্তি নিয়ে সংশয় নেই, তবে সেটা ফরাসিদের হাতে নয় বরং স্থানীয় অধিবাসীরাই তৈরি করেছিলেন।

*পুডিং

যত দূর জানা যায়, মধ্যযুগে পশ্চিম ইউরোপের গৃহিণীরা পুডিং তৈরি শুরু করেন। এর প্রথম লিখিত প্রমাণ পাওয়া যায় ১৬১৫ সালে প্রকাশিত গার্ভাস মারখামের লেখা দ্য ইংলিশ হাউসওয়াইফ বইতে। বইটিতে মূলত তিন ধরনের পুডিংয়ের (সেদ্ধ পুডিং, রুটির পুডিং আর ভাতের পুডিং) রেসিপি দেওয়া হয়েছিল। ১৮৩৭ সালে ব্রিটেনের আলফ্রেড বার্ড তাঁর স্ত্রীর ডিমের প্রতি অ্যালার্জি থাকায় কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে যে পুডিং তৈরি করার রেসিপি বের করেন, সেটিকেই ধরা হয় প্রথম বিক্রয়যোগ্য পুডিং হিসেবে।