রাজধানীসহ পাঁচ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৫

ই-বার্তা ডেস্ক ।।  রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, টেকনাফ, কুমিল্লা, খুলনা ও ময়মনসিংহে কথিত পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, নিহত পাঁচজেনের মধ্যে একজন মাদক সম্রাট, একজন ইয়াবা বিক্রেতা, এককজন মাদক বিক্রেতা, একজন অস্ত্র ছিনতাই মামলার চিহ্নিত আসামি এবং অপরজন ডাকাত রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ও শুক্রবার ভোরে এ বন্দুকযুদ্ধে তারা মারা যান।

নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিবেদকদের দেওয়া নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো…

যাত্রাবাড়ী
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর পার গেণ্ডারিয়া এলাকায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হযরত আলী (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় তার কাছ থেকে ১১ পিস ইয়াবা, অবিস্ফোরিত ককটেল, বিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ২টার দিকে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

পুলিশের দাবি, নিহত হযরত আলীর নামে বিভিন্ন থানায় প্রায় ৪০টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সালাম, কনস্টেবল জাহেদ। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

 এ সময় স্থানীয়রা নিহত হযরত আলীই কুখ্যাত মাদক বিক্রেতা বলে জানায়।

হযরত আলীর বিরুদ্ধে ৪০টি মামলা রয়েছে। সে এবং তার স্ত্রী রহিমা কুখ্যাত মাদকবিক্রেতা। বর্তমানে তার স্ত্রী ভারতে পলাতক রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

টেকনাফ
কক্সবাজারের টেকনাফে র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নুরুল আলম (৩৫) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। নুরুল ডাকাত নামে পরিচিত এই নিহত ব্যক্তি টেকনাফের নয়াপাড়া আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুট ও আনসার কমান্ডার আলী হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল পাঁচটার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান গনমাধ্যমের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘রাতে র‍্যাবের একটি টহল দল টেকনাফ দমদমিয়া এলাকায় কিছু লোককে চ্যালেঞ্জ করলে তারা অতর্কিতভাবে র‍্যাবের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এসময় র‍্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ধরে চলে দুই পক্ষের গোলাগুলি। এসময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। পরে র‍্যাব রোহিঙ্গা ডাকাত নুরুল আলমের লাশ শনাক্ত করে।’

  কুমিল্লা

কুমিল্লার তিতাসে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. আল-আমিন নামে এক ডাকাত নিহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলবার, একটি এলজি ও ৫ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

জেলার তিতাস উপজেলার ঝড়িকান্দি এলাকায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

নিহত আল-আমিন ওই উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের মাঈনুদ্দিনের ছেলে।

পুলিশের দাবি, আল-আমিনের বিরুদ্ধে ডাকাতি, ছিনতাইসহ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

 এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে আটক আল-আমিনকে সঙ্গে নিয়ে জেলা ডিবি পুলিশ ও তিতাস থানা পুলিশ অবশিষ্ট টাকা এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে নামে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে তিতাসের দড়িকান্দি নামক এলাকায় পৌঁছালে একদল ডাকাত পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে আল-আমিনকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়লে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।

 ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আব্দুর রশিদ (৫০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। নিহত আব্দুর রশিদ শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকার রফিক মিয়ার ছেলে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য। তাদের পুলিশ লাইন হাসপাতাল চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

পুলিশের দাবি, নিহত রশিদ একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মাদক, বিস্ফোরকসহ সাতটি মামলা রয়েছে।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন হোমিও মেডিকেল কলেজ মাঠে কিছু মাদক ব্যবসায়ী মাদক কেনাবেচা করছে- এমন সংবাদে সেখানে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ।

 জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও একশ গ্রাম হিরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।

খুলনা
খুলনা নগরীর নিরালা কবরস্থান সংলগ্ন দীঘির পাড় এলাকায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’মাদক ব্যবসায়ী মাসুদ রানা (৩৫) ওরফে মাসুদ নিহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশি পাইপগান, ১টি চাপতি, ১টি বড় ছোরা ও ১০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৩টার দিকে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান মিঠু জানান, রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিরালা দীঘির পাড় কবরস্থান এলাকায় মাদক উদ্ধারে অভিযান চালায় সদর খানা পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের গোলাগুলিতে মাসুদ রানা নিহত হয়।

নিহত মাসুদ খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার বসুপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল হকের ছেলে।

মাসুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি নগরীর কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী বলেও জানান তিনি।

ই-বার্তা /  তামান্না আলী প্রিয়া