‘রোহিঙ্গা সংকট এখন আঞ্চলিক নিরাপত্তার হুমকি’

ই-বার্তা ডেস্ক।।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার হুমকি উল্লেখ করে এর স্থায়ী সমাধানের জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ (ইউএনজিএ)-র ৭৪ তম অধিবেশনে চার দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন এবং আত্মীকরণে মিয়ানমারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন দেখাতে হবে।’ 

স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য বারের মত এবারেও বাংলায় ভাষণ দেন।

এই বছরের সাধারণ বিতর্কের বিষয়বস্তু হল ’দারিদ্র্য বিমোচন, মানসম্মত শিক্ষা, জলবায়ু কর্মসূচি এবং অন্তর্ভূক্তিকরণে বহুপক্ষীয় প্রচেষ্টার সংযুক্তি।’ নাইজেরিয়ার টিজানি মুহাম্মাদ-বান্দে জাতিসংঘের ৭৪ তম অধিবেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বৈষম্যমূলক আইন ও রীতি বিলোপ করে মিয়ানমারের প্রতি রোহিঙ্গাদের আস্থা তৈরি করতে হবে এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের উত্তর রাখাইন সফরের আয়োজন করতে হবে।’

তৃতীয় প্রস্তাবে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বেসামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েনের মাধ্যমে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।’   

প্রধানমন্ত্রী তার চতুর্থ ও শেষ প্রস্তাবে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণসমূহ বিবেচনায় আনতে হবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যান্য নৃশংসতার দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা প্রলম্বিত হয়ে তৃতীয় বছরে পদার্পণ করেছে, কিন্তু মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও চলাফেরার স্বাধীনতা এবং সামগ্রিকভাবে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফিরে যায়নি।

এই সমস্যার অনিশ্চয়তার বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুধাবনের অনুরোধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সমস্যা এখন আর বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। বাংলাদেশের সকল প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিষয়টি এখন আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপরন্তু, ক্রমবর্ধমান স্থান সঙ্কট এবং পরিবেশগত অবক্ষয়ের কারণে এই এলাকার পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি সমস্যার বোঝা বহন করে চলেছি যা মিয়নামারের তৈরি। এটি সম্পূর্র্ণ মিয়ানমার এবং তার নিজস্ব নাগরিক রোহিঙ্গাদের মধ্যকার একটি সমস্যা। তাদের নিজেদেরই এর সমাধান করতে হবে।’

ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু