শক্তি বাড়াতে অধিক সন্তান নিচ্ছে রোহিঙ্গা পরিবার

ই-বার্তা ডেস্ক।।  হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ মোট ৭২ হাজার শিশুর জন্ম নিয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।  অর্থাৎ প্রতিদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জন্ম নিচ্ছে ৬৬ শিশু।  জানা যায়, নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেতেই তারা অধিক সন্তানের জন্ম দিচ্ছে।

২৫ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা নারীর চার সন্তান।  তার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এত কম বয়সে কেন তিনি চারটি সন্তান নিয়েছেন।  জবাবে ওই নারী বলেন, ‘আমাদের শক্তি দরকার।’

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল মতিন বলেন, এই শক্তি হলো তাদের কাছে সাবলম্বী হওয়া।  একটি রোহিঙ্গা শিশু যদি এক রকম রেশন পায়, তাহলে চারটি চার রকম রেশন পাবে।  অর্থাৎ তাদের সুযোগ সুবিধা চারগুন বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া সম্ভব না, কারণ সরকার এ বিষয়ে কোনো জরিপ করেনি। তবে ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ৩২ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে।  আমরা ধারণা করছি, ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা ৭২ হাজারের মতো হবে।

গত বছরের ১৬ মে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছিল, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদিন ৬০টি করে শিশুর জন্ম হচ্ছে।  ওই বছরই সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও প্রতিদিন প্রায় ১৩০টি শিশুর জন্ম হচ্ছে।

বাস্তুচ্যুত হয়ে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট মাসে যখন বাংলাদেশে আসতে শুরু করে তখন থেকেই ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গা নারীদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন করতে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়।  স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জন্ম নিয়ন্ত্রক বড়ি ও কনডম দেওয়া হয়।

ক্যাম্পের স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণে নারীরা কিছুটা আগ্রহী হলেও পুরুষরা একেবারেই আগ্রহী নন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রথম থেকেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সর্ম্পকে সচেতন করার চেষ্টা করা হয়েছে।  তাদের বিভিন্ন উপকরণও দেওয়া হয়েছে।  তবে অধিকাংশ প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেতেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জন্ম নিয়ন্ত্রণে আগ্রহী ছিল না।

ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু