‘সানি লিওনের অজানা গল্প’ও গোলমেলে

বিনোদন ডেস্ক ।। কানাডার এক অখ্যাত কিশোরী থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের প্রাপ্তবয়স্ক সিনেমার অভিনেত্রী, সেখান থেকে মুম্বাইয়ের বলিউডের নায়িকা। সানি লিওনের এই ক্যারিয়ার নিয়ে একটি টানটান উত্তেজনাপূর্ণ গল্প তৈরির সব উপাদানই আছে।

 

কিন্তু ‘করেনজিত কৌর : দ্য আনটোল্ড স্টোরি অফ সানি লিওন’ মনে হচ্ছে সানি লিওনকে নিয়ে দিশেহারা। জি৫ প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত হচ্ছে ১০ পর্বের এই বায়োপিক। যাতে সানি লিওনকে উপস্থাপন করতে গিয়ে সানি লিওন আসলে কে- তা নিয়ে বেশ গোলমাল পাকিয়ে ফেলা হয়েছে।২০ এর কোঠার সানি লিওন এবং ৩০ এর কোঠার সানি লিওনকে প্রায় একই রকম দেখানো হয়েছে। তার বেড়ে ওঠা বা সময় অতিবাহিত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়েনি।একটি সেলফোন বাদে পুরো একটি দশকের মেজাজ ও প্রবণতা ব্যাখ্যা করার কোনো সুস্পষ্ট চেষ্টা দেখা যায়নি।যুক্তিহীনভাবে তার জীবনের বিক্ষিপ্ত টাইমলাইন টেনে নেওয়া হয়েছে। এবং সানি লিওনের জীবনের নির্দিষ্ট কোনো অধ্যায়ের ওপরও বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়নি।সানি লিওনের পর্নস্টার জীবনকে অন্যায্যভাবেই অনেকটা যৌনকর্মীর জীবনের মতোই চিত্রায়ন করা হয়েছে। বেকার বাবা, মাদকাসক্ত মা, আড্ডাবাজ আত্মীয়, বাজে বস, মন্দ বয়ফ্রেন্ড, রুষ্ট বেস্ট ফ্রেন্ড, বর্ণবাদ, টোকেন সেক্স প্রভৃতি বিষয় নিয়ে বায়োপিকটি গন্তব্যহীনভাবে এগিয়ে চলেছে।তবে রাইসা সৌজানির ক্ষেত্রে বিষয় কিছুটা স্বাভাবিক লাগে। উজ্জ্বল চেহারার ১২ বছর বয়সী করেনজিত একটি রক্ষণশীল শিখ পরিবারে একটি অসন্তুষ্ট আমেরিকান-ইন্ডিয়ান হিসেবে কীভাবে বেড়ে ওঠে তার একটি ধারণা দিবে।

 

গ্রুশা কাপুর এবং বিজয় আনন্দের অভিনয়ের মধ্য দিয়ে মেয়ের পর্নমুভিতে অভিনয়ের পেশা গ্রহণের ফলে বাবা-মা যে বিব্রত অবস্থায় পড়েন এবং মর্মপীড়ায় ভুগতে পারেন তার একটি বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে।কিন্তু কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া এর অভিনয় এবং সংলাপগুলো ভয়ঙ্কর বিরক্তিজনক।সানি লিওনের তথাকথিত বিদ্রোহ, জীবন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গোপনীয়তা, উভকামী যৌনতা এবং বদহজম হওয়া সাফল্য, এসব বিষয় ভালোভাবে উঠে আসেনি অসঙ্গত বয়ান এবং বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে।তাহলে প্রশ্ন হলো, সত্যিকার সানি লিওন কে? তিনি কি এমন কেউ যিনি শুধু কিছু টাকা পেয়েই সন্তুষ্ট? সমালোচনার প্রতি করুণার সাথে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন? সামাজিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন? নিজের পরিবারের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছেন? নিজের কাজকে উপভোগ করেন? যার কোনো দু:খবোধও নেই পেশা নিয়ে? কে জানে!কোনো মনোযোগী মন হয়তো সানি লিওনের সীমাহীন উচ্চাকাঙ্খা ও পর্নস্টার হওয়ার বিষয়টিকে নৈতিকতা , যৌন নিপীড়ন এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা- প্রভৃতির নিরিখে বিচার করতেন।কিন্তু পরিচালক আদিত্য মনে হয় মধুর ভান্ডারকরের সংবেদনশীলতা দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছেন।ওই বায়োপিকে সানি লিওন অনিচ্ছাকৃতভাবেই ব্যক্তি এবং পরফর্মেন্সের পার্থক্য দেখিয়েছেন। তবে এতে পারফর্মেন্সের ঘাটতি রয়ে গেছে। যা পুরো বায়োপিকজুড়েই ছিল।আসলে ‘করেনজিত কৌর : দ্য আনটোল্ড স্টোরি অফ সানি লিওন’ এতটাই বোরিং যে সেখানে তাঁকে ঠিকমতো খুঁজেই পাওয়া যায় না। আর এতটাই নিষ্প্রভ যে সমালোচনা করাও সময়ের অপচয়!

 

 

 

ই-বার্তা ।। ডেস্ক