সালমানের জামিনের নেপথ্যে কে?

ই-বার্তা ডেস্ক ।। কারাদণ্ডের মেয়াদ ৪৮ ঘণ্টা পার না হতেই জামিনে মুক্তি পেলেন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান। কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার দায়ে বৃহস্পতিবার ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল সালমানকে। শনিবার বিকালে জেলা দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পেলেন।

তবে সালমানের জামিনের নেপথ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদির ঘনিষ্ঠতা ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন অনেকে। বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এমন মন্তব্য করা হয়েছে। ওইসব গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, বলিউডের ‘ব্যাড বয়’ বললেই মনে আসে দুই তারকা— সঞ্জয় দত্ত ও সালমান খান। তবে সঞ্জয় দত্তের সৌভাগ্য মোটেই সালমানের মতো নয়। সঞ্জয়কে বেআইনি অস্ত্র রাখার মামলায় প্রায় ৫ বছর হাজতবাস করতে হয়েছিল।

রাজনীতি সঞ্জয়কে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছিল। বাবা সুনীল দত্ত ছিলেন কংগ্রেসের এমপি। বোন প্রিয়া দত্তও পার্লামেন্টের সদস্য। কংগ্রেসের ছোঁয়া এড়াতে পারেননি মুন্নাভাই। অন্যদিকে, সালমান খানের সঙ্গে সচেতনভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক ছিল না। তিনি রাজনীতিকে জড়িয়ে ধরেননি। তবে রাজনীতি সব সময়েই তাড়া করে বেরিয়েছে তাকে।

২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি ফিরে দেখা যাক। তখনও নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। গুজরাটে গিয়ে ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন সালমান। গুজরাট দাঙ্গায় তখন অভিযুক্ত মোদি। তার সঙ্গে একই সুতোয় হাত রেখে ঘুড়ি উড়ানোর পরেই সমালোচিত হয়েছিলেন সালমান। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, সালমানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক বেশ ভালো।

 

সালমানের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর অভিযোগ, মোদি-ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সালমানকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। সালমানের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা প্রয়োগ করেছিল মহারাষ্ট্রের তৎকালীন কংগ্রেস সরকারই।

 

২০১৫ সালে ৬ মে মুম্বাইয়ের দায়রা আদালত পাঁচ বছরের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে ‘হিট অ্যান্ড রান’কেসে। দু’দিন পরেই অবশ্য মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট দায়রা আদালতের সেই রায় স্থগিত করে দেয়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আগের কংগ্রেস সরকারই ভাইজানকে বিপাকে ফেলতে চেষ্টার ত্রুটি করেনি।

 

এবারে, শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদেই নাকি মাত্র ৪৮ ঘণ্টা জেলবাসী হয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সালমান। তাছাড়া নিম্ন আদালতে এবারে জেলযাত্রার নিদানেও নাকি ছিল রাজস্থানের স্থানীয় বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের ক্ষোভকে প্রশমিত করার প্রয়াস। জোধপুর আদালতের বিচারপতি দেব কুমার ক্ষাত্রীরও আচমকা ট্রান্সফারে অন্য কিছুর গন্ধ পেয়েছেন অনেকে। যদিও রাজস্থান হাইকোর্ট সূত্রের খবর, এটি রুটিন বদলি।

 

হিট অ্যান্ড রান কেস, অনিচ্ছাকৃত হত্যা, বেআইনি অস্ত্র মামলা— প্রতিটি ক্ষেত্রেই সালমানকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে রাজনীতির ভরকেন্দ্র। ভাইজান মোটেই রাজনীতিতে জড়াননি, তবে রাজনীতি তাকে জড়িয়েছে চুম্বকের মতোই।

 

 

 

ই-বার্তা/ডেস্ক