স্বাভাবিক হচ্ছে ক্রাইস্টচার্চের জনজীবন, মরদেহ হস্তান্তর শুরু

ই-বার্তা।।  নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে হামলায় নিহতদের পরিচয় শনাক্ত শেষে মরদেহ গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন স্বজনরা। পরিচয় শনাক্তের পর আজ থেকে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করবে কর্তৃপক্ষ।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডার্ন জানিয়েছেন, সব ধরণের প্রক্রিয়া শেষে আজ থেকে মরদেহ হস্তান্তর শুরু হয়ে চলবে বুধবার পর্যন্ত।

স্থানীয় সময় সোমবার ক্রাইস্টচার্চে নিহতদের স্মরণে শোক বইতে সাক্ষর করে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, বর্বরোচিত ওই হামলায় পুরো জাতি গভীরভাবে শোকাহত। নিউজিল্যান্ডের জনগণ সবসময় তাদের পাশে থাকবে। অভিযুক্তদের বিচার নিউজিল্যান্ডেই হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

হামলার দুইদিন পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে ক্রাইস্টচার্চের জনজীবন। স্কুল, কলেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমও আজ থেকে শুরু হয়েছে। তবে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ডুনেডিনে কড়া নিরাপত্তায় চালু হয়েছে বিমানবন্দরের কার্যক্রম।

এমন ভয়াবহ ঘটনায় অভিযুক্ত হামলাকারী ব্রেনটন ট্যারান্টের অস্ট্রেলিয়ায় থাকা পরিবারের সদস্যরাও বিপর্যস্ত ও লজ্জিত। হতাহতদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তারা।

ক্রাইস্টচার্চের হামলার শেয়ার করা ১৫ লাখ ভিডিও প্রত্যাহার এবং ১২ লাখ ভিডিও ব্লক করার কথা জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। ট্যারান্ট শুক্রবার হামলা চালানোর সময় ফেসবুকে সেটি লাইভ স্ট্রিম করেছিলেন।

নিউজিল্যান্ডের অস্ত্র আইন পরিবর্তন নিয়ে আজ মন্ত্রিসভায় আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই অবশ্য দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ডেভিড পারকার বলেছিলেন, নিউজিল্যান্ড থেকে সব ধরনের সেমি-অটোম্যাটিক আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা চলছে।

স্বঘোষিত শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী ২৮ বছর বয়সী ট্যারান্ট শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের আল নূর এবং লিনউড মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর অতর্কিতে বন্দুক হামলা চালান। হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০-এ দাঁড়িয়েছে বলে স্থানীয় সময় রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ। আর আহত ৪৭ জনের মধ্যে দু’ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলেও একটু দেরিতে যাওয়ায় বেঁচে যান নিউজিল্যান্ডে সফররত বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।

শনিবার আটাশ বছর বয়সী ট্যারান্টকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জামিন অযোগ্য পুলিশি হেফাজতে রিমান্ডের আদেশ দেন। ৫ এপ্রিল ট্যারান্টকে আবারও আদালতে হাজিরার তারিখ দেয়া হয়েছে। ততদিন তিনি পুলিশের হেফাজতেই থাকবেন।