স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে গেলেন দুই মার্কিন সিনেটর

মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান দলের দুই সদস্য প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস রোগীর সংস্পর্শে আসার পর নিজেরাই কোয়ারেন্টাইনে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।

রোববার কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল একশন কনফারেন্সে ওই রোগীর সংস্পর্শে আসেন তারা। এরপরেই টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ এবং অ্যারিজোনার রিপাবলিকান পল গোসার স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে থাকার ঘোষণা দেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে। তারা সাবধানতার সঙ্গেই পদক্ষেপ নেবেন ও ভাইরাস সংক্রমণের কোনো লক্ষণও আপাতত নেই বলে জানিয়েছেন।

ক্রুজ বলেছেন, তিনি টেক্সাসে পুরো ১৪ দিন থাকবেন। ভাইরাস আক্রান্তের সঙ্গে তার হাত মেলানো এবং সংক্ষিপ্ত আলাপ হয়েছিল।গোসার রোববার তার বিবৃতিতে বলেন, তার তিনজন স্টাফ মেম্বারসহ তিনি আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে বেশকিছু সময় ছিলেন এবং কয়েকবার হাতও মিলিয়েছেন। এখন তিনি ১৪ দিন আরিজোনায় নিজ বাড়িতে থাকবেন এবং তার অফিসও এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে।

তিনি বলেন, আমাদের রোগের কোনো লক্ষণ নেই, সুস্থও আছি। তবে আমরা সাবধান এবং সুরক্ষিত থাকছি।এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়নি। সোমবার হোয়াইট হাউস এমন তথ্য জানিয়েছে।

যদিও তার সঙ্গের অন্তত দুজন আইনপ্রণেতা আক্রান্ত হওয়ায় তারা স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন। ভাইরাস পজেটিভ হওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে একটি সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার পর তারা আক্রান্ত হয়েছেন।-খবর রয়টার্সের

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র স্টিফেন গ্রিসহাম এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্টকে কোভিড-১৯ ভাইরাসের পরীক্ষা করা হয়নি। কারণ তিনি কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে আসেননি কিংবা তার শরীরে কোনো উপসর্গও দেখা যায়নি। তার চিকিৎসক তাকে ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণে রাখছেন।

মঙ্গলবার ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে। চীনে নতুন করে ১৭জন মারা গেছেন বলে এএফপির খবরে বলা হয়েছে।এখন পর্যন্ত শতাধিক দেশে কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর জানা গেছে।

এদিকে প্রাদুর্ভাবে নতুন রোগী ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পুরো ইতালিতে চলাচলের ওপর কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি জনসমাগম নিষিদ্ধ করার মত কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সরকার।

এর ফলে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ইউরোপে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় পড়া দেশটির সাড়ে ছয় কোটি মানুষ কার্যত অবরুদ্ধ দশার মধ্যে পড়লো।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে সোমবার নাগরিকদের যার যার বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। কারও জরুরি কারণে দূরে কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন থাকলে সেজন্য আগে থেকে অনুমতি নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, যারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে, তাদের সুরক্ষার জন্যই এ কড়াকড়ি। এখন আর অপেক্ষা করার ‘সময় নেই’।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ইতালিতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৩৬৬ জন থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৬৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে নয় হাজার। চীনের মূল ভূখণ্ড বাদ দিলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ইতালিতেই সবচেয়ে বেশি।