হারলে অভিবাসী বলে আমাকে অপমাণ করতোঃ মেসুত ওজিল

ই-বার্তা।। নিজ দেশের ফুটবল ফেডারেশনের বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়ে ক্ষোভ আর অভিমানে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানালেন জার্মান তারকা ফরওয়ার্ড মেসুত ওজিল। রোববার টুইটারে দীর্ঘ এক বিবৃতির মাধ্যমে নিজের অবসরের ঘোষণা দেন তুর্কি বংশোদ্ভুত এই মুসলিম ফুটবলার। চলতি বছরের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে জার্মানি ছিটকে যাওয়ার কারণ হিসাবে দায়ী করা হয়েছিল আর্সেনাল তারকার নিষ্প্রভ পারফরম্যান্সকে।

 

ওজিল বলেন, অনেক ভাবনাচিন্তার পর আমি আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিতে বাধ্য হলাম। বিশ্বকাপে আমার সঙ্গে যা হয়েছে সেটার পর আর জার্মানির হয়ে খেলব না। জার্মানির বর্ণবিদ্বেষের আবহে আমার মনে হয়েছে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। এক সময় গর্ব হতো জার্মান জার্সি পরে মাঠে নামলে। এখন ছবিটা পুরো আলাদা। সিদ্ধান্তটা খুবই কঠিন। কিন্তু বিদায়বেলায় এটাই বলতে চাই, আমি সব সময় দেশের জন্য নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। জার্মানির হয়ে ৯২ ম্যাচ খেলেছেন। হয়েছেন পাঁচবারের বর্ষসেরা জার্মান ফুটবলার।

 

২০১০ বিশ্বকাপে অপরিচিত হিসাবে মাঠে নামলেও টুর্নামেন্ট শেষে ওজিল হয়ে উঠেছিলেন বিশ্বের সেরা তারকাদের মধ্যে একজন।সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তায়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে বিতর্কে পড়েন ওজিল। জার্মান ফুটবল ফেডারেশন (ডিএফবি) থেকে তাকে সতর্কও করা হয়। ওজিল বলেছেন, খেলায় জিতলে তাকে বলা হতো ‘জার্মান’ আর হেরে গেলে তার পরিচয় হয়ে ওঠতো একজন অভিবাসী। মূলত জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি রেইনহার্ড গ্রিন্ডেলকেই অভিযুক্ত করেছেন বিদায়ী এই ফুটবলার। অভিযোগ করেছেন অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও। তিনি বলেন, ‘তার (ফেডারেশন সভাপতি) মতো বর্ণাবাদী মানসিকতার মানুষের উচিত নয় জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের মতো বিশ্বের অন্যতম বড় ফুটবল সংস্থার দায়িত্বে থাকা।

 

গ্রিন্ডেল এবং তার সমর্থকদের চোখে যখন আমি ভালো খেলে জিতি তখন আমি একজন জার্মান। আর যখন হেরে যাই তখন আমি অভিবাসী। ক্ষোভ প্রকাশ করে ওজিল লিখেছেন, ‘গ্রিন্ডেলের আচরণে আমি মোটেও আশ্বচর্য হইনি। কিন্তু যখন ফেডারেশনের অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও আমার তুর্কি পরিচয়কে অপমান করলেন, এবং স্বার্থপরের মতো আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রপাগান্ডায় নামলেন (তখন বুঝতে পারলাম), যথেষ্ট হয়েছে, তাদের সাথে আর নয়। দেশের হয়ে তার অতীত স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন, ‘অনেক গর্ব নিয়ে জার্মান জার্সিটা গায়ে দিতাম। কিন্তু এখন আর নয়। নিজেকে অবাঞ্ছিত মনে হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে (জার্মানির হয়ে) যা অর্জন করেছি ধরে নেব তা ভুলে গেছি।

 

ই-বার্তা/ডেস্ক রিপোর্ট