স্মৃতির মণিকোঠায় হুমায়ুন ফরীদি


ই-বার্তা প্রকাশিত: ২৯শে মে ২০১৭, সোমবার  | দুপুর ০১:২৬ সিনেমা

বাংলা চলচ্চিত্রে খলনায়ককে এক ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন যিনি, যে সিনেমায় নায়কের চেয়ে খলনায়কের প্রতিই দর্শকের আকর্ষণ ছিল বেশি, তিনি হুমায়ূন ফরীদি ।সাদামাটা চেহারার অসাধারণ এই অভিনেতার ৬৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। অভিনয় জীবন শুরু মঞ্চে অভিনয়ের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য কার্যক্রমের সাথেও জড়িত ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৯০ সালে ‘ভূত’ নাটকের নির্দেশনা দেয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় হুমায়ুন ফরীদির ঢাকা থিয়েটার জীবন। ‘ভূত’ অবলম্বনে পরবর্তীতে শাহরুখ খান-রানী মুখার্জির ‘পহেলী’ নামের একটি ছবিও নির্মিত হয় মুম্বইয়ে।

মূলত বন্ধু-অভিনেতা আফজাল হোসেনের সাহস এবং উৎসাহে হুমায়ুন ফরীদির টেলিভিশন যাত্রা শুরু হয়। হুমায়ুন ফরীদির সর্বাধিক সংখ্যক এবং সর্বাধিক সফল কাজ ছিল হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে। হুমায়ুন আহমেদের ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিকে তাঁর অভিনীত চরিত্র কান কাটা রমজানের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।

১৯৮৫ সালের দিকে হুমায়ুন ফরীদি অনুধাবন করেন তাঁর পক্ষে অভিনয় ছাড়া অন্য কিছু থেকে রোজগার করে জীবন নির্বাহ করা সম্ভব নয়। অনেকটা এমন দুর্বলতা থেকেই ১৯৯০ থেকে শুরু করেন চলচ্চিত্রে যাত্রা। তিনি বলতেন, “আমার চলচ্চিত্র অভিনয়টাকে যে যাই বলুক না কেন, ওটা না করলে আমি বাঁচতে পারতাম না। চলচ্চিত্রে কাজ না করলে হয়তো যাত্রা দলে ভিড়ে যেতাম”। মঞ্চ, টেলিভিশন ও সিনেমায় আলোড়ন তোলা এই অভিনেতা অসাধারণ সব অভিনয়ের মাধ্যমে সকল শ্রেণীর দর্শকদের কাছে অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। একটা সময় ছিল যখন টিভি নাটক মানেই ফরীদি। তারপর একটা সময় মানুষ শুধু হুমায়ন ফরীদির অভিনয় দেখতেই সিনেমা হলে যেতেন । সেই হুমায়ূন ফরীদি ২০০৩ সাল থেকে সিনেমাতে অভিনয় প্রায়ই ছেড়ে দিয়েছিলনে । আর মানুষও হলবিমূখ হয়েছে ।

স্বাধীনতার পর রমনায় প্রথম স্ত্রী মিনু ওরফে নাজমুন আরা বেগমের সাথে বেলী ফুলের মালা বদল করে বিয়ে করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন ফরীদি। সে মালা ছিঁড়ে যায় যখন ফরীদির জীবনে আসেন সুবর্ণা মোস্তফা। জীবনের শেষ অংকে এসে ২০০৮ সালে স্ত্রী সূবর্ণা মোস্তফার সাথেও ছাড়াছাড়ি হয় তাঁর। মৃত্যুর সময়ে তিনি নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছিলেন। সকাল ১০টার দিকে ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় বাথরুমে পড়ে গিয়ে তিনি মারা যান। ধানমন্ডির মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসকরা জানান, তিনি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করা এবং কম ঘুমানোর কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে তার দেহের ওজন কমে যায়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও হ্রাস পায়।

১৯৫২ সালের ২৯শে মে ঢাকার নারিন্দায় জন্মেছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ১২ তারিখে এই অভিনেতা মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

সর্বশেষ সংবাদ

সিনেমা এর আরও সংবাদ