নয়ন তোমারে পায়না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১৯শে জুলাই ২০১৭, বুধবার  | দুপুর ০২:০৪ দেশ

আফিফা মোহসিনা অরণি।। সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। অনেকের কাছে এই সকালটা একটা সাধারণ বর্ষার সকাল মনে হয়েছে। কিন্তু সাহিত্যপ্রেমী মানুষদের নিশ্চয় কিছুটা খালি খালি লাগছে আজ। কি যেন এক শুন্যতা চারিদিকে।

বর্ষাকাল অনেকের মতই একজন অসাধারণ গুনী যাদুকরের খুব প্রিয় সময় ছিল। পাঁচ বছর আগে সেই যাদুকর যখন আমাদের ছেড়ে পাড়ি জমায় অন্য যাদুর দুনিয়ায়, সেদিনও এভাবেই বৃষ্টি ঝড়ে পড়ছিল আকাশ থেকে। যাদুকরের প্রিয় জোছনা তাঁকে বিদায় দেয়নি তাতে কি? বৃষ্টি তাঁর ভালোবাসা দিয়ে সিক্ত করে দিতে ভুলে যায়নি সেই অদ্ভুত যাদুকরকে। তিনি বেঁচে থাকলে আজ সকালেই হয়তো একটি চমৎকার বর্ষা বন্দনা লিখে ফেলতেন। হয়তো কোন গান, হয়তো কোনো গল্প। আবার হয়তোবা লিখে ফেলতেন ছোট্ট কোন চিরকুট তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রীকে। সেখানে লেখা থাকতো খিচুড়ি খাওয়ার আবদার। আদরের সন্তানদের কানে কানে বাড়ির ছাদে ভিজতে যাওয়ার দুষ্ট বুদ্ধি দিতেন। হয়তো নিজেই বৃষ্টিতে নেমে যেতেন রাস্তার পাশের কদম গাছটি থেকে কয়েকটি ফুল নিয়ে আসার জন্য। হয়তো ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলে সবাইকে নিয়ে রওনা হয়ে যেতেন নিজের হাতে সাজানো প্রিয় নুহাশ পল্লীর বৃষ্টি বিলাস বাড়িটিতে। এরকমই অদ্ভুত কান্ড


হুটহাট করে বসতেন হুমায়ুন আহমেদ। নিশ্চয় বুঝতে বাকি নেই, বলছি আমাদের গল্পের যাদুকরের কথা। শুধুই কি গল্প, হুমায়ুন আহমেদ একাধারে তাঁর যাদুর ছোঁয়া দিয়েছেন সিনেমা, নাটক, গান, কবিতা আর তাঁর অদ্ভুত সুন্দর সব কথায়, যাকে আমরা হুমায়ুন উক্তি বলতে পারি।

পাঠকের ভালোবাসা হুমায়ুন আহমেদের জন্য কতটা, তা নতুন করে বুঝাতে হবেনা। কিন্তু এক হুমায়ুন ভক্তের আজ সকালের একটি লেখা উল্লেখ না করে পারছি না, আফসারী আহমেদ অতসী ফেসবুক বার্তায় লিখেছেন, “পুরো পাঁচটি বছর কেটে গেছে বইমেলায় যাওয়া হয়না। আগের মত টান পাইনা। শুধু মনে হয় কেন যাব। যার জন্য ছুটে যাওয়া সেই তো পালিয়ে গেছে। বাস্তব জীবনে অপরিচিত হয়েও উনি আমার অনেক আপন। তিনি বাস করেন আমার মনে। আজ তাঁর প্রয়াণ দিবসে তাঁর জন্য শুধু ভালোবাসা। অনেক ভালোবাসা। জনম জনম তব তরে কাদিব”। এভাবেই কোটি মনে বাস করেন হুমায়ুন আহমেদ। তিনি ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।

তাঁর বিদায়ের জন্য প্রস্তুত ছিল না প্রকৃতি। কখনো থাকতোও না। তবুও বারবার মনে হয়, বড় অবেলায় হারিয়েছি তাঁকে। আর কিছুদিন হিমু, মিসির আলী, শুভ্র, রুপা বেঁচে থাকলে মন্দ হতো না।

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ এর আরও সংবাদ