ছাত্রাবস্থায় উপার্জন ও অভিভাবকের ভাবনা


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১৭ই আগস্ট ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার  | বিকাল ০৩:০৬ দেশ

ই-বার্তা।। পড়াশুনা করা কালীন সময়ে ছেলে-মেয়ে বাবা-মার উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু পাশ্চাত্যের ছোঁয়া লেগেছে আমাদের দেশেও। এখন আর কেউ দীর্ঘদিন বাবার উপর নির্ভর করে থাকেনা। “বাবার হোটেল” কথাটি আজকাল শোনা যায় খুব কম। ছেলে-মেয়েরা সমান তালে যুগের সাথে পা মিলিয়ে আয় করতে শিখে গেছে নিজের হাতখরচ। স্কুলের গন্ডি পেরিয়েই দেখা যায় অনেক ছেলে-মেয়ে বাড়তি আয়ের উৎস খুঁজতে শুরু করে। ছাত্রাবস্থায় বেশিরভাগ ছেলে-মেয়েকেই দেখা যায় টিউশনি করতে। এটি অত্যন্ত নিরাপদ ও ভালো একটি কাজ। কারণ অন্যকে পড়ানোতে নিজেরও পড়াশুনার চর্চাটা অব্যাহত থাকে। এর পাশাপাশি অনেককে দেখা যায় বিভিন্ন পার্ট টাইম জব করতে। প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ ঘন্টা কাজ করে খুব সহজেই তারা তাঁদের হাতখরচের উপায় বের করে নিচ্ছেন।

বাবা-মায়েরাও আজকাল সন্তানদের ছাত্রাবস্থাতেই কাজ করে উপার্জন করাকে উৎসাহ দিচ্ছেন। দেয়াই উচিৎ। কারণ দেশ গড়ার জন্য তরুণদের হাতে যে শক্তি রয়েছে তা আর কারো হাতে নেই। অল্প বয়সেই যদি কেউ নিজের ব্যয়ভার বহন করার ভার নেয় তাহলে সে খুব তাড়াতাড়ি শিখে ফেলবে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো। বরং এই বয়সেই পরিশ্রম করে টিকে থাকার লড়াইয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা ভালো। আর পড়াশুনার পাশাপাশি বাড়তি সময়টা কোনো কাজে ব্যয় করলে তা ছেলে-মেয়েদের অনেক আজেবাজে কাজ থেকে দূরে রাখে। যা সমাজের জন্যেও খুব ভালো একটি ভবিষ্যৎ তৈরী করে। নিজের দক্ষতা ও কাজ দিয়ে উপার্জন করলে তা একজন তরুণের মানসিক শক্তি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। নিজের উপার্জনে প্রিয়জনকে উপহার দেয়ায় যে গর্ব তা আর অন্য কিছুতে নেই।

এরকম খুব কমই দেখা যায় যে ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া কোনো শিক্ষার্থী ঘরে বসে থাকে। বাইরে কাজ না করলেও অনেকেই করছে ঘরে বসে আয়। অনলাইনে হাজার হাজার জব এখন চাইলেই পাওয়া যায়। ফ্রিল্যান্সিং করে ভালো উপার্জন করা যায়। এছাড়া নিজের উদ্যোগেও এখন অনেকে অনলাইনে কেনা-বেচার ব্যাবসা করেন। এভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায় অনেক অল্প বয়সেই।

তাই সকলের উচিৎ আমাদের দেশের এইসব তরুণদের উৎসাহ প্রদাণ করা এবং অল্প বয়সে আয় করায় কোনপ্রকার বাঁধা না দেয়া। কাজ যত ছোটই হোক বা যত কম উপার্জনই হোক তাকে উৎসাহ প্রদাণ করা উচিৎ। সেইসব বাবা-মায়েরা যারা সন্তানদের অড জব বা ছোটখাটো কাজ করতে দিতে চাননা, তাঁদের জন্য প্রশ্ন, বলুনতো আপনার সন্তানের বয়সে থাকতে আপনি কি পেরেছিলেন নিজের হাতখরচ নিজে উপার্জন করতে? তবে অভিভাবক হিসেবে আপনার কর্তব্য, আপনার সন্তান যেখানে কাজ করছে বা টিউশনি করছে সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে। বাবা-মা হিসেবে আপনার সন্তানকে ভালো একটি পরিবেশ দিন, বাকিটা তাকে নিজেই অর্জন করে নিতে বলুন। এভাবেই তৈরী হবে একটি কর্মচঞ্চল, আত্মবিশ্বাসী ও দক্ষ জাতি।

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ এর আরও সংবাদ