বিএসএমএমইউ এর ক্যান্টিনে বস্তাভর্তি পচা মুরগি


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৮ই সেপ্টেম্বর ২০১৭, শুক্রবার  | দুপুর ১২:৩০ অপরাধ

ই-বার্তা ।। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে তিনটা। ক্লাস শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) টিএসসি ক্যান্টিনে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন ১০/১২ জন চিকিৎসক। এমন সময় একজন বেয়ারা একটি বস্তা নিয়ে ক্যান্টিনের পেছনে রান্নাঘরে প্রবেশ করে। সে যখন ক্যান্টিনের ভেতর দিয়ে রান্না ঘরের দিকে যাচ্ছিল তখনই পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

দুর্গন্ধের মাত্রা এতটাই বেশি যে, যারা খাবার খাচ্ছিলেন তাদের সবাই খাওয়া বন্ধ করে নাক চেপে ধরেন। অনেকেই বমিভাব রোধ করার চেষ্টা করেন।

এ সময় তারা ক্যান্টিন সুপারভাইজার জাহিদের কাছে জানতে চান ওই বস্তায় কি ছিল। প্রথমে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।

পরে শিক্ষার্থী চিকিৎসকরা রান্নাঘরে ঢুকে বস্তা খুলে দেখেন বস্তাভর্তি মুরগির পচা মাংস। এ সময় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী চিকিৎসকরা জানান, এ ক্যান্টিন নিয়ে তাদের অভিযোগের শেষ নেই। এখানে নিন্মমানের খাবার বেশি দামে বিক্রি করা হয়। অথচ পাশেই শিক্ষকদের ক্যান্টিনে মানসম্পন্ন খাবার অনেক কম দামে সরবরাহ করা হয়। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির হস্তক্ষেপে একটি মূল্য তালিকা টানানো হয়। কিন্তু তাও মানা হচ্ছে না।

তারা জানান, এখানের খাবার চিকিৎসক, রোগী এমনকি শিক্ষকরাও খেয়ে থাকেন। এখানে ক্যান্টিন সুপারভাইজার পচা মুরগি আনেন কোন সাহসে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বস্তাভর্তি মরা মুরগি দেখে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় ক্যান্টিন সুপারভাইজার জাহিদ বলেন, বাসার ফ্রিজ নষ্ট হওয়ায় এগুলো এখানে ফ্রিজে রাখতে আনা হয়েছে। এগুলো ক্যান্টিনের নয়। কিন্তু বাসায় দুশ’ পিস মুরগির মাংস দিয়ে কি করবেন জানতে চাইলে আর কোনো কথা বলতে পারেননি জাহিদ। শিক্ষার্থী চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন, ক্যান্টিনটি কোনো টেন্ডার ছাড়াই জাহিদ পরিচালনা করছেন। প্রশাসনের এ ধরনের উদাসীনতার কারণে তারা পচা মুরগি ক্যান্টিনে রাখার সাহস পেয়েছে।

এ ঘটনা তৎক্ষণাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত অতিরিক্ত রেজিস্টার অধ্যাপক ডা. আসাদুল ইসলাম, ডেপুটি প্রক্টর শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন, টিএসসি ক্যান্টিন কমিটির সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমানকে জানানো হয়। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পচা মুরগির মাংস ফেলে দিতে বলেন এবং ক্যান্টিন বন্ধ করে দেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ’র অতিরিক্ত রেজিস্টার অধ্যাপক ডা. আসাদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আমি বিস্মিত। ক্যান্টিনের লোকদের এত বড় সাহস যে তারা এখানে পচা মুরগি নিয়ে আসে। তারা হয়তো এভাবে আমাদের আগেও পচা মুরগি খাইয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে সঙ্গে সঙ্গে ক্যান্টিন বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়া শনিবার তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদের স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে।

সুত্র ঃ যুগান্তর

সর্বশেষ সংবাদ

অপরাধ এর আরও সংবাদ