নগ্নতাকে ভর করে বেশি দিন মিডিয়াতে স্থায়ী হওয়া যায় না
ই-বার্তা ডেস্ক ।। র্যাম্প মডেল হিসেবে রিয়া চৌধুরী সুপরিচিত। পাশাপাশি একাধিক বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। তাই নাম লিখিয়েছেন চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রে রিয়া চৌধুরীর অভিষেক হয়েছে কয়েক বছর আগেই। এরই মধ্যে মূলধারার এবং ডিজিটাল ফরমেটের ছবিতে কাজ করেছেন। ২০০৮ সালে রিয়া প্রথম বাণিজ্যিক ধারার ছবি ‘খেলা’তে অভিনয় করেন। ছবিটি নির্মাণ করেন শেখ দিদার। এতে রিয়াকে দেখা যায় মার্শাল আর্ট খ্যাত নায়ক রুবেলের বিপরীতে। এই ছবির পরপরই রিয়া চৌধুরী সায়মন তারিকের নির্দেশনায় ‘এ মন জুড়ে’ ছবিতে কাজ করেন এবং এই ছবিটা দর্শকদের মনে আলাদা জায়গা করে নেন রিয়া চৌধুরী।
মিডিয়াতে কিভাবে আসলেন?
চৌধুরী রিয়াঃ ছোট বেলা থেকেই আমার মায়ের সখ ছিল আমি মিডিয়াতে কাজ করব। আমার মায়ের নিজস্ব প্রোডাকশন হাউজ আছে সেই ভাবে মিডিয়াতে চলে আসা। তাছাড়া আজ ২২ বছরের উপর মিডিয়াতে কাজ করছি।
আপনি তো একজন ফ্যাশান ডিজাইনার তাহলে কেনো এই পেশাকে বেছে নিলেন?
চৌধুরী রিয়াঃ এখানে একটা ভুল হয়েছে আমি মিডিয়াতে অনেক আগে থেকে কাজ করি। পরে আমি ফ্যাশান ডিজাইন এর উপর পড়শুনা শেষ করে ফ্যাশান ডিজাইনার হয়েছি।
মিডিয়াতে কাজ করতে আপনার অনুপ্রেরণা কে?
চৌধুরী রিয়াঃ অবশ্যই বলব অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল আমার পরিবার। কিন্তু সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার আম্মা-জান রিনা চৌধুরী। তিনি সব সময় আমাকে সাপোর্ট দিয়ে গিয়েছেন এবং এখনো সব সময় আমার পাশে আছেন।
মিডিয়াতে বর্তমানে কি কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
চৌধুরী রিয়াঃ বর্তমানে আমি সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত আছি। রোজার ঈদে আমার সিনেমা টোকাই মুক্তি পাওয়ার কথা ছিলো।কিন্তু এই মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া হয় নি। তাছাড়া আরো ৩ টি সিনেমায় আমি চুক্তিবদ্ধ আছি।গুলবাহার ও একা কি জীবন এই দুটি সিনেমা আমার কোরবানি ঈদে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিলো, এই পরিস্থিতিতে সিনেমা মুক্তি হওয়াটা বেশ বড় সমস্যা তৈরি হবে। আর এই সময়ের ভিতর এই দুটি সিনেমার শুটিংয়ের কাজ কিছু অংশ বাকি আছে। তাই করোনা পরবর্তী সময়ে মুক্তি দেওয়া হবে। একা কি জীবন সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজক রবিন খান। গুলবাহার সিনেমাটি হারুন অব রশিদ হারুনের পরিচালিত। যত দিন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় ততদিন আর নতুন কোন কাজে অগ্রসর হতে চাচ্ছি না।আর বর্তমানে আমি আগের কাজ শেষ করে একটু সময় নিয়ে নতুন কাজ নিয়ে ভাববো।
নাটক, সিনেমা না র্যাম্প কোনটা বেশি ভালো লাগে?
চৌধুরী রিয়াঃ নাটক, সিনেমা, র্যাম্প তিনটা তিন ধরনের কাজ। আমি তিনটাতেই কাজ করতে খুব সাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি কিন্তু মন থেকে ভালবেসে মিডিয়ার সকল স্তরে কাজ করছি। কাজের প্রতি যদি ভালবাসা আর দায়িত্ববোধ না থাকতো তাহলে তো আর কাজ করতে পারতাম না। তাছাড়া আমি বেশ কয়েটি কমার্শিয়াল টিভিসিতে কাজ করেছি। আর আমি সব সময় ধীরে সুস্থে চিন্তা করে কাজ করি।
বর্তমানে তো অনেকেই বিভিন্ন ওয়েব সিরিজে কাজ করছে আপনি এই ধরনের কোন কাজ করবেন কি?
চৌধুরী রিয়াঃ ওযেব সিরিজে কাজ তো অবশ্যয় করবো। অনন্য মামুন ভায়ের মাধ্যামে এখন থেকে দুই বছর আগে আমার কাছে ওযেব সিরিজের কাজ আসে, সেটা আমি তখন করি নি। আর আমিতাভ দাদা আমাকে নিয়ে একটি ওযেব সিরিজ করবেন। আসলে গল্প ও চরিত্র যদি ভালো লেগে যায় তাহলে যে কোন সময় আরো বেশ কয়েকটি ওযেব সিরিজে সাক্ষর করবো।
সাকিব খানের বিপরীতে কোন সিনেমা করবেন কি?
চৌধুরী রিয়াঃ সাকিব খানের সাথে আমার শ্যুটার সিনেমাটি আমার করার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আমার কোন একটা কারনে ঐ সিনেমাতে কাজ করা হয় নি। সাকিবের সাথে আমার কাজ করার অনেক অফার আসে কিন্তু সাকিবের বিপরীতে কাজ করার বাজে দিক হচ্ছে সিনেমাটি সাকিব নির্ভর করে তোলা হয়, যেটা আমার একদম পছন্দ না। আর সাকিব খান আমার খুবই ভালো বন্ধু, ওর আর আমার সব সময় যোগাযোগ হয়। আমাদের এই বন্ধুত্ব যেন সারা জীবন অটুট থাকে।
করোনায় মিডিয়া জগৎ ও সিনেমা হলের যে ক্ষতি হচ্ছে তাতে কি ভবিষ্যতে কোন সমস্যা হবে?
চৌধুরী রিয়াঃ বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে করোনা ভাইরাসের কারনে। আগেও বলেছি আমারই তিনটি সিনেমা মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি সিনেমা মুক্তি পেলে কি দর্শক সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে পারবে না। একজন শিল্পীর জন্য খুশির খরব তার কাজটি যেন দর্শক গ্রহণ করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা কোন ভাবেই সম্ভব না। আমাদেরকেই তো এখন কাজ করতে স্বাস্থবিধি মেনে কাজ করতে হচ্ছে। আসলে এইভাবে কাজ করাটা জটিল ও অত্যন্ত কষ্ট দায়ক।
নগ্নতাকে আকড়ে যারা মিডিতাতে ক্যারিয়ার গডতে চাচ্ছে তাদের ভবিষ্যত কি?
চৌধুরী রিয়াঃ আমি আসলে যারা নগ্নতাকে ভর করে মিডিয়াতে স্থায়ী বা ক্যারিয়ার গড়তে চাই তাদের সম্পর্কে ভালো কিছু বলতে পারবো না। তবে এটুকু বলতে পারি দুই একটা বিল বোর্ড বা ছোট কিছু কাজ করে মডেল বা নায়িকা হিসাবে পরিচয় দেওয়া কিন্তু আসল কাজ না। মিডিয়া এমন একটি জায়গা এখানে সব সময় আপনাকে ভাল কাজ করতে হবে। যুগটা কিন্তু প্রতিযোগিতার যুগ এখানে আপনাকে আপনার কাজ দিয়েই টিকে থাকতে হবে। আর নগ্নতাকে ভর করে বেশি দিন মিডিয়াতে স্থায়ী হওয়া যায় না।
র্যাম্প থেকে বড় পর্দা কোনটার অনুভূতি কেমন?
চৌধুরী রিয়াঃ সব কয়টার অনুভূতি সম্পূর্ণ আলাদা কিন্তু। এক একটা কাজের মজা এক ধরনের। তবে আমি র্যাম্প থেকে বড় পর্দা সব ধরনের কাজেই আগ্রহ সহকাজে কাজ করি। আর আমি নিজস্বভাবে মনে করি র্যাম্প থেকে বড় পর্দা সব গুলো মিলিয়ে কিন্তু আজকে এই অবস্থান আমি তৈরি করেছি।
করোনায় দর্শক ও দেশবাসীর জন্য কিছু বলেন?
চৌধুরী রিয়াঃ একটা কথায় বলবো, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ যেন আমাদের এই মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি দিন। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুক। বাইরে বের হলেই যেন মাস্ক ও হ্যান্ড সেনেটাইজার ব্যবহার করুক। আমার অনেক পরিচিত মানুষ এই ভাইরাসের কারণে সব মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করি আপনারা সবাই সুস্থ থাকেন, যেন আবার আমারা স্বাভাবিক জীবনে চলে আসতে পারি।