সংগীত শিল্পী তমাল চৌধুরীর ওপর মাজার বাহিনীর হামলা
ই-বার্তা ডেস্ক ।। সংগীত শিল্পী ও মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (মিজাব) এর সভাপতি তমাল চৌধুরীর ওপর হামলা চালিয়েছেন দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাতে রাজধানীর হাজারীবাগের সুলতানগঞ্জ এলাকায় গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে বিতর্কের জেরে হামলা চালায় স্থানীয় একটি মাজারের দুর্বৃত্তরা। খাজা আজমেরী দরবার শরীফ নামে ওই মাজারটির বিরুদ্ধে মাদকসেবনসহ নানা অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গত শনিবার রাত ৯ টার দিকে খাজা আজমেরী মাজারের সামনে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। সড়কজুড়ে মাজার কর্তৃপক্ষ গাড়ি পার্কিং করায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এসময় সেখানে উপস্থিত সংগীত শিল্পি তমালা চৌধুরী সড়কের ওপর থেকে গাড়ি সরিয়ে নিতে বললে মাজারের একদল দুর্বৃত্ত তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বাধা দিতে এলে স্থানীয় ছেলে রনী, রাকিব, বাবু, জসীম , সিপু ও সেলুন মালিক মিলন নামের একজন কে পিটিয়ে আহত করেন হামলাকারীরা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক তমাল চৌধুরী বলেন, মাজারের সামনে দুই পাশের সড়কে চায়ের দোকান বসিয়েছেন মাজার কর্তৃপক্ষ। তার ওপর টুল বসিয়ে প্রায়ই আডডা ও রাস্তা বন্ধ করে অসামাজিক গানের আয়োজন করে মাজারের লোকজন, সাথে থাকা এলাকার দু একজন মিলে সবসময় তারা রাস্তাটি দখল করে রাখে। এতে সাধারণ মানুষের খুব অসুবিধে হয়। শনিবার রাতে মাজারের সামনে হায়েস মাইক্রো ও একটি বড় গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে পুরো রাস্তায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। আমি সেই জ্যাম দেখে একজন মানুষ হিসেবে দীর্ঘ সময় জ্যাম ছুটিয়ে না পেরে গাড়ি চালককে গাড়িটি সরাতে বলি তিনি ভুল বুঝতে পেরে গাড়িটি সরিয়ে ফেলেন.. তার ৫ মিনিট পর মাজারের ভিতর থেকে একদল লোক এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন, প্রতিবাদ করায় পাশ থেকে বশির নামের এক লোক এসপির ড্রাইভার দাবি করে আমার উপর হামলা চালায়। তখন আমি এলাকার সবার অনুরোধে এলাকার ভাই ও আওয়ামী লীগকর্মী জলিলের বাইকে করে চলে যাই। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে বড় কোনো হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চলমান এসএসসি পরীক্ষার সময়ও রাস্তায় লাউড স্পিকারে গান বাজনার আয়োজন করে মাজার কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে একাধিকবার অভিভাবকরা অভিযোগ জানালেও আমলে নেয়নি মাজার কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া খাজা আজমেরী দরবার শরীফের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের রয়েছে নানা অভিযোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেছেন, মাজারের অনেক ভক্ত আছেন যারা খুব পাওয়ারফুল ব্যক্তি। তারা ইসলামের নামে নানা অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড করে থাকে। সরলপ্রাণ মানুষকে ঠকানোর ব্যবসা করছে তারা।
মাজারে নিয়মিত গাজা, হিরোইনসহ নানা মাদকের আখড়া বসে দাবি করেন ওই ব্যক্তি। বলেন, অসামাজিক কর্মকাণ্ড করে করে শান্তি ও সাম্যের ধর্ম ইসলামের ক্ষতি করছে খাজা আজমেরী দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাজার কর্তৃপক্ষ স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের প্রশ্রয়দাতা। শাহীন সিকদার নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় নানা অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে মাজার কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে খাজা আজমেরী দরবার শরীফের কেউ কথা বলতে রাজী হননি।
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেছেন, মাজারের ব্যাপারে এর আগে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর তমাল চৌধুরীর ওপর হামলার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।সংগীত শিল্পি তমাল চৌধুরীর ওপর মাজার বাহিনীর হামলা।