অনন্য এক মেহজাবিন

ই-বার্তা ।।  মেহজাবিন মানেই যেন মুগ্ধতার অপর নাম। অনবদ্য অভিনয় দিয়ে দর্শকের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন তিনি। নাটকে নিয়মিত হলেও নেই সিনেমায়।

ভক্তরা চাচ্ছেন তিনি সিনেমায় আসুন। সেই শুভদিনও সামনে আসছে। শিগগিরই রুপালি পর্দায় দেখা যাবে তাকে। এম   ন গুঞ্জনই ভাসছে মিডিয়ায়। নাটকে অভিনয়, সিনেমায় আসার গল্পসহ সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গ নিয়ে সম্প্রতি একান্ত আড্ডায় মেতেছিলেন যুগান্তরের সঙ্গে। বিস্তারিত লিখেছেন- অনিন্দ্য মামুন

এমনিতেই আলোচনায় ছিলেন মেহজাবিন। গেল বছর সে আলোচনার পালে হাওয়া তুলে দেয় তার অভিনীত নাটক ‘বড় ছেলে’। এরপর থেকে তাকে নিয়ে যেন আলোচনা থামছেই না। একের পর এক নাটকে অভিনয় করে যাচ্ছেন। দর্শকরাও লুফে নিচ্ছেন নাটকগুলো।

নাটকের বক্সঅফিস থাকলে সেখানে যে মেহজাবিনই সেরার আসন দখল করে রাখতেন এটা অনেকটাই নিশ্চিত। অনলাইন মাধ্যম ইউটিউবে তার অভিনীত নাটকের দিকে তাকালেই বোঝা যায় জনপ্রিয়তার পরিমাপ!

এ জনপ্রিয়তা কিন্তু একদিনে তৈরি হয়নি। বেশ কিছু গুণ তাকে আজকের অবস্থানে এনেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, শুটিং লোকেশনে অভিনয় ছাড়া আর অন্য কোনো ভাবনা থাকে না তার মধ্যে। স্পটে শুটিংয়ের ফাঁকে মুঠো ফোন নিয়ে ব্যস্ততাকে পাশ কাটিয়ে, স্ক্রিপ্ট পড়ে চরিত্রে মনোযোগী থাকেন তিনি।

লোকেশনে গল্প, আড্ডায় মেতে উঠতেও দেখা যায় না তাকে। ঠিক যেন মনোযোগী ছাত্রী। একের পর এক মানসম্মত নাটকে অভিনয়ের কারণে নির্মাতাদের কাছে নির্ভরযোগ্য অভিনেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। ফলে নির্মাতার ভরসার শক্ত একটা জায়গা এখন মেহজাবিনের দখলেই।

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই চলচ্চিত্রের প্রস্তাব পাচ্ছেন তিনি। কিন্তু বড় পর্দায় দেখা যায়নি তাকে। কেন? এমন প্রশ্ন তাই মেহজাবিন ভক্তদের অনেকের মনেই উঁকি দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ইচ্ছা আছে চলচ্চিত্রে কাজ করার। কিন্তু সবার আগে গল্প তো পছন্দ হতে হবে আমার।

গল্প পছন্দ না হলে তো কাজ করব না।’ কিছুদিনের মধ্যে সেই খরাও নাকি কাটতে চলেছে- এমন গুঞ্জনই রটেছে। এ প্রসঙ্গে মেহজাবিন বলেন, ‘কথা হয়েছে এটা সত্যি। তবে সেটা সময়ের ওপর নির্ভর করছে। ফাইনাল হলে নিশ্চয়ই সবাই জানতে পারবেন।’ স্পষ্ট করে না বললেও রুপালি পর্দায় যে শিগগিরই কাজ শুরু করবেন মেহজাবিন, সেটা অনেকটাই নিশ্চিত।

২০০৯-এর লাক্স সুন্দরী হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন এ অভিনেত্রী। তখন থেকেই একের পর এক প্রস্তাব এসেছে বড় পর্দায় কাজ করার। হাতছানি দিয়েছে নতুন নতুন স্বপ্নের। পরিচালকদের লম্বা লাইনকে টেকনিক্যালি এড়িয়ে গেছেন। তাই নাটক আর মডেলিং করেই আট বছর কাটিয়ে দিলেন।

এবার একটু ভিন্ন চিন্তা নিয়ে মাঠে নামবেন বলে জানালেন এ তারকা। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জও নেবেন বলে জানান। তাই ব্যাটে-বলে মিলে গেলেই সিনেমায় নাম লেখাবেন তিনি। নিজেকে দেখাবেন বড় পর্দায়। চরিত্রের দিক থেকে কিছুটা খুঁতখুঁতে স্বভাবের মেহজাবিন। অভিনয়ে তার এই স্বভাবটাই নাকি তাকে অনেক পরিণত করেছে বলে জানিয়েছেন অনেক নির্মাতা।

পরিবারের সবাই প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে উপভোগ করতে পারেন এমন ছবি করতে চান মেহজাবিন। তিনি বলেন, ‘ভালোমন্দ মিলে এখন অনেক কাজ হচ্ছে চলচ্চিত্রে। কিন্তু আমি এমন কাজ করতে চাই, যা দেখলে দর্শক বিরক্ত হবেন না। বরং আবারও হলে যেতে চাইবেন।’ তবে যাই করুক না কেন ছোট পর্দার ইমেজ ঠিক রেখেই আগামী পথ চলবেন বলে জানালেন এ অভিনেত্রী।

২০০৯ সালে যখন এই মেহজাবিনের মাথায় চ্যানেল আই সুপারস্টারের মুকুট উঠেছিল তখন তিনি ও লেভেলে। বাংলাদেশের আলোবাতাসে বেড়ে ওঠা হয়নি তার। কারণ জন্ম চট্টগ্রামে হলেও বেড়ে ওঠা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে। বাবা মহিউদ্দিনের হাত ধরে পাড়ি জমিয়েছিলেন মরুর দেশে।

তারপর সেখানেই কেটেছে শৈশব। গ্ল্যামার দুনিয়ার হাতছানিটা ছিল তখন থেকেই। টাইমস অব ওমানে মডেল হিসেবে হাজির হতে দেখা গেছে তাকে। সঙ্গে শিখেছেন ব্যালে ড্যান্স। তবে সেসব ছিল শুধু শখের বশে। ২০০৭ সালে দেশে ফিরে শখ শব্দটাই নেশা হয়ে গেল তার। স্বপ্নকে অনেকটাই ছুঁয়েছেন মেহজাবিন। শুধু ছুঁয়েছেন বললে ভুল হবে, স্বপ্নের চেয়ে অনেক বেশিও পেয়েছেন বলে অকপটে জানান এ অভিনেত্রী।

অভিনয় নিয়ে অনেক পথচলা হল, এবার সংসার বাঁধার পরিকল্পনা কবে? জানতে চাইলে এ তারকা বলেন, ‘আপাতত এমন কিছু ভাবছি না। বিয়ের জন্য আরও সময় নিতে চাই।’ কেমন পাত্র পছন্দ আপনার? প্রশ্নের মুখে মেহজাবিন বলেন, ‘সবার আগে একজন ভালো মানুষ হতে হবে।

এ ছাড়া ক্রিয়েটিভ মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে দরকার। যার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পারব।’ এদিকে আজ এ তারকার জন্মদিন। দিনটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে জন্মদিন ঘটা করে পালন করা হতো। এখন আর তেমনভাবে পালন করতে ইচ্ছা হয় না। বছর কত দ্রুত চলে যাচ্ছে। দিনটি নিয়ে আমার বিশেষ কোনো পরিকল্পনা থাকে না। বন্ধু পরিবার আর সহকর্মীরাই সব প্ল্যান করেন।’

সুত্রঃ যুগান্তর