অপকর্মে জড়িতদের নাম বলতে শুরু করেছেন সম্রাট

ই-বার্তা ডেস্ক।।  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি (বহিষ্কৃত) ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট তার ক্যাসিনো কারবার, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দখলবাজিতে যারা মদদ দিয়েছেন, তাদের নাম এবার প্রকাশ করতে শুরু করেছেন।  

গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি প্রতিদিনের পাশাপাশি প্রতি মাসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সংগঠনকে অর্থ দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। পাশাপাশি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) এনামুল হক আরমানও জিজ্ঞাসাবাদে চমকপ্রদ নানা তথ্য দিচ্ছেন। 

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিবির হেফাজতে থাকা সম্রাট ও আরমানকে র‌্যাব-১-এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর সবচেয়ে আলোচিত যুবলীগ নেতা সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে ৭ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ঢাকায় তার বাসা ও কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করে র‌্যাব। এ ঘটনায় সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানার দুই মামলায়ই আরমানকে সহযোগী হিসেবে আসামি করা হয়। এদিকে গ্রেপ্তারের সময় আরমানকে মদ্যপ অবস্থায় পাওয়ায় কুমিল্লায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায় সম্রাট ও আরমানকে গত ১৫ অক্টোবর ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি পায় পুলিশ। 

গত মঙ্গলবার অস্ত্র ও মাদক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পর ডিবির হেফাজতে নেওয়া হয় সম্রাট ও আরমানকে। সেদিন রাতভর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবির একটি টিম। দুজনকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, গত বুধবার এবং গতকাল সকালেও তারা কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন সম্রাট ও আরমানকে। আরমানের কাছ থেকে যেসব উত্তর পাওয়া গেছে সেগুলো সম্রাটের তথ্যের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দফায় কোনো প্রশ্নেরই উত্তর দেননি সম্রাট। আরমান বেশকিছু চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন। সম্রাটকে প্রশ্ন করলেই বলে ওঠেন, আমি খুব অসুস্থ। বুকে সবসময় ব্যথা থাকে। পরে গভীর রাতে ডিবির এক কর্মকর্তা কৌশল পাল্টিয়ে সম্রাটকে বলেন, আপনি স্বেচ্ছায় বলেন আপনি কীভাবে সম্রাট হয়েছেন? পরে সম্রাট বলেন, সব দোষ কি শুধু আমার। আমাকে যারা আজ সম্রাট বানানোর পেছনে কাজ করেছেন তাদের তো ধরা হচ্ছে না। আমি কার না উপকার করেছি। সবাইকেই আমি অর্থ দিয়েছি। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়মিত অর্থ দিয়েছোম। বিভিন্ন সংগঠন অনুষ্ঠান করলে সেখানে আমি অনুদান দিয়েছি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কতিপয় কর্মকর্তাকে নিয়মিত অর্থ দিতে হয়েছে। আজ আমি বড় ধরনের অপরাধ করে ফেলেছি।

র‌্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, গতকাল দুপুরে ডিবির কাছ থেকে সম্রাট ও আরমানকে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন অপকর্মের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের ব্যাপারে বেশকিছু তথ্য দিচ্ছেন তারা। তথ্যগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। 

ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু