কৃষিমন্ত্রী ক্ষমা না চাইলে সারা দেশে অবরোধ

ই-বার্তা ।।  সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়ে দেয়া বক্তব্য বিকাল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার না করলে আবারও অবরোধ কর্মসূচি পালন করে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১১টা ২০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকাল ৫টার মধ্যে মতিয়া চৌধুরী ক্ষমা ও বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে আমরা সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবো।

এসময় তারা ৭ মের মধ্যে দাবি না মানলে ফের অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে দেশ অচল করার হুমকি দেয়।

এদিকে সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। তারা মঙ্গলবার রাত থেকে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও বাংলা একাডেমি এলাকায় অবস্থান করে স্লোগান দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘কোটা সংস্কারের আন্দোলন স্থগিত আছে। যারা নতুন কমিটি করেছে তারা স্বার্থ হাসিলের জন্যই এ কমিটি করেছে। আমাদের ব্যানার ব্যাতীত কেউ যদি অন্য ব্যানারে আন্দোলন করে তাহলে আমরা তা প্রতিহত করা হবে।’

সোমবার (৯ এপ্রিল) সংসদে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘যারা দেশের জন্য জীবন বাজি রাখেন, পৃথিবীর সব দেশে তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সুযোগ পাবে না, রাজাকারের বাচ্চারা সুযোগ পাবে? তাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংকুচিত হবে? রাজধানী কেন্দ্রিক একটি এলিট শ্রেণি তৈরির চক্রান্ত চলছে। তারই মহড়া গতকাল আমরা দেখলাম।’

আন্দোলনকারীদের পক্ষে রাশেদ খান বলেন, ‘ভিসির বাসভবনে হামলাকারীরা বহিরাগত এবং এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ পাশাপাশি ‘হামলাকারী পুলিশের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের’ দাবি জানান তিনি।

আন্দোলনকারীদের অপর অংশটি সোমবার জানায়, সব শিক্ষার্থী আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এমনকি বেলা ১১টার দিকে তারা অবস্থানে অংশ নেয়ার কথাও জানায়। এর মধ্যেই সকাল ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আখতারুজ্জামানের বাসভবন হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা সরেজমিন পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় আন্দোলনের নামে যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবন ভাঙচুর করেছে তাদের ছাড় দেয়া হবে না বলেও তিনি জানান।

বিদ্যমান কোটার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে- সরকারে এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন আগামী ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। সোমবার বিকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সরকারের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত আসে।