প্রশ্ন ফাঁস দিয়েই শুরু হলো এসএসসি পরীক্ষা

ই-বার্তা ।।  এক সপ্তাহ আগে থেকে কোচিং সেন্টার বন্ধ এবং পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট আগে আসন গ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা দিয়েও ঠেকানো যায়নি প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া। তাই  এবারও প্রশ্ন ফাঁস দিয়েই শুরু হলো এসএসসি পরীক্ষা।

বুধবার রাত থেকেই বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থ দাবি করছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের একটি গ্রুপ।

বৃহস্পতিবার সকালে, রাজধানীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরির স্কুল পরিদর্শনে যান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এমসয়, প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এমন প্রমাণ পেলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে।

পরীক্ষা শুরুর ৪০ মিনিট পর, গণমাধ্যাম কর্মীরা বাংলা প্রথম পত্রের বহুনির্বাচনী প্রশ্নের নমুনা মন্ত্রীকে দেখানোর পরে তিনি জানান, ফেইসবুক প্রকাশিত নমুনা প্রশ্নের সাথে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কোন মিল নেই। কিন্তু, পরীক্ষা শেষে ফেইসবুকে প্রকাশিত বাংলা প্রথম পত্রের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ‘খ’ সেটের নমুনা প্রশ্নের সাথে হুবহু মিল পাওয়া গেছে।

এদিকে এসএসসির ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে যদি আসল প্রশ্নপত্র মিলে যায় সেক্ষেত্রে পরীক্ষা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ। আজ বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ৩টার দিকে গণমাধমকে এ কথা জানান তিনি।

27459386_227423821134463_673110188285059311_n

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। যার মধ্যে এমন প্রশ্নও রয়েছে যা আসল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গোয়েন্দা পুলিশকে ফেসবুকের লিংক পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

আজ দেশব্যাপী একযোগে অভিন্ন প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। আজ প্রথম দিন সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথমপত্র, সহজ বাংলা প্রথমপত্র এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে এবছর প্রশ্নফাঁস ও নকল প্রতিরোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করতে বলেছে। কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।

যদিও এর মধ্যেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্ন বাংলা প্রথম পত্রের ‘খ’ সেটের প্রশ্নটি ফেসবুকে পাওয়া যায় সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে। প্রশ্নটি এরপর থেকে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে ছড়াতে থাকে।

এবছর ১০টি শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ জন। সারাদেশে মোট ৩ হাজার ৪১২টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য বলছে, এ বছর এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে দুই বছর আগে (২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ) নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে নিবন্ধন করেছিল ২১ লাখ ১৪ হাজার ২২২ জন। নিয়মিত এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে এ বছর পরীক্ষা দিচ্ছে ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭৩ জন শিক্ষার্থী। অবশ্য অনিয়মিত (আগে অনুত্তীর্ণ) ও মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থী মিলিয়ে ১০ শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ জন।

আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৪ মার্চ পর্যন্ত চলবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।