বরিশালে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মারামারি

ই-বার্তা ।। বরিশাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছেই মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দুই পক্ষ। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে নগরীর সদর রোড দলীয় চত্বরে দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।

তার আগে দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবুল হোসেন খানের বিরুদ্ধে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক কমিটির নেতারা। তবে এই মারামারিতে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিবের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আবুল হোসেন খান। বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক কামরুজ্জামান মিজান সমকালকে বলেন, নব গঠিত কমিটি প্রত্যাখান করে সংবাদ সম্মেলন শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে প্রেস ক্লাবের অদূরে বিএনপি কার্যালয়ে যান। সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া নতুন কমিটির নেতকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেছে। পরে সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

অপরদিকে নবগঠিত কমিটির সদস্য সচিব নাসির হাওলাদার বলেন, নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলার নেতাকর্মীরা বরিশাল নগরে আনন্দ মিছিল করেন। পরে দলীয় কার্যালয়ে তারা সংক্ষিপ্ত সভা করছিলেন। বিলুপ্ত কমিটির লোকজন আকস্মিক মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয় চত্বরে ঢুকে হামলা চালায়। হামলায় ছাত্রদল নেতা সৈয়দ শামিউল ইসলাম শুভ ও শিহাব তালুকদার আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিলুপ্ত কমিটির নেতারা বলেন, গত বছর ৮ নভেম্বর হারুন অর রশিদ সিকদারকে আহ্বায়ক ও মিজানুর রহমান চুন্নুকে সদস্য সচিব করে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ৪১ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিলেন দক্ষিণ জেলার তৎকালীন কমিটি। এর ৭ দিন পর ১৫ নভেম্বর আবুল হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও আবুল কালাম শাহীন সদস্য সচিব করে দক্ষিণ জেলায় নতুন কমিটি হয়। দায়িত্ব পাওয়ার ৫দিন পর ২০ নভেম্বর আহ্বায়ক আবুল খান নিজ উপজেলা বাকেরগঞ্জের কমিটি স্থগিত করেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি বাকেরগঞ্জ শহরে বাসায় নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েন। ওই দিন বিকালে বরিশাল নগরে বিএনপি কার্যালয়ে সভা করে উপজলোয় নতুন কমিটি দেন আবুল হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সদ্য গঠিত কমিটির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ জমাদ্দার ১৫ আগস্ট শোকসভায় অংশগ্রহণ করে দল থেকে বহিস্কার হন। তারপর তিনি আর বিএনপিতে যোগ দেননি। সদস্য সচিব নাসির হাওলাদারের পুরো পরিবার জাতীয় পার্টির রাজনীতি করেন। এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে নাসির হাওলাদার বলেন, উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন সুপার ফাইভ কমিটির ৭০ জনের মধ্যে ৬৬ জনের ভোটে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আবুল হোসেন খান বলেন, বিলুপ্ত কমিটি অর্থের বিনিময়ে করা হয়েছিল। তাই তিনি সেটা বাতিল করে তৃণমূলের ভোটে নতুন কমিটি করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিলুপ্ত কমিটির নেতারা সংবাদ সম্মেলন শেষে দলীয় কার্যালয়ে এসে হামলা করেছে। তখন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল ও আরেক নেতা তছলিম উদ্দিন অদূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।মীর জাহিদ সমকালকে জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলা নবগঠিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করতে তিনি দলীয় কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। ফেরার সময় আবুল হোসেন খানের এক ঘনিষ্ঠজন তাকে ডেকে কথা বলছিলেন। তখন দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। বাকেরগঞ্জের কর্মসূচির বিষয়টা তিনিও জানতেন না বলে জানান।