যে কোন হুমকি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ই-বার্তা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ দেশের সম্পদ, দেশের মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের মূর্ত প্রতীক। তাই পেশাদারিত্বের কাঙ্খিত মান অর্জনের জন্য সেনাবাহিনীর সকলকে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে। পবিত্র সংবিধান এবং দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

রবিবার দুপুরে (৩ মার্চ) রাজশাহী সেনানিবাসে আয়োজিত সেনাবাহিনীর ৭,৮,৯ ও ১০ বীর এর ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যে কোনো ইউনিটের জন্য বিরল সম্মান ও গৌরবের বিষয়। কর্মদক্ষতা, কঠোর অনুশীলন এবং কর্তব্য নিষ্ঠার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা পেলেন তার মর্যাদা রক্ষার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে আপনারা সব সময় প্রস্তুত থাকবেন। পতাকা পাওয়ায় আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাই।

সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, পতাকা হলো জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান এবং মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সকল সৈনিকের পবিত্র দায়িত্ব।

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, সেনাবাহিনী তার মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি সব সময়ই জাতির গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেদের নিয়োজিত করেছে। বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ তদারকি, যোগাযোগের জন্য কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রকল্প, ফেনির মহিপাল ফ্লাইওভার নির্মাণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার আপনাদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনাসদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহিঃর্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে।

অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকার সেনাবাহিনীর সদস্যদের নানা সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্যদের চিকিৎসা সেবা ও আবাসনসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। রেশন বৃদ্ধি করেছি। ভাতা ও ক্ষতিপূরণ অনুদান উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করেছি। জেসিওর পদকে দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণি এবং সার্জেন্ট পদকে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারের প্রশিক্ষণ, প্রশাসন, আবাসনসহ একটি আধুনিক ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলতে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বর্তমানে ট্রেনিং এবং প্রশাসনিক সুবিধা বৃদ্ধির কার্যক্রম চলমান।

এর আগে হেলিকপ্টারযোগে সকাল ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী সেনানিবাসে পৌঁছালে, সেখানে তাকে স্বাগত জানান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। এরপর প্রধানমন্ত্রী শহীদ কর্নেল আনিস প্যারেড গ্রাউন্ডে ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের ৭, ৮, ৯ এবং ১০ বীর এর ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড জাতীয় পতাকা কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরে তিনি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং ওই চার বীরকে জাতীয় পতাকা প্রদান করেন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নৌ-বাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, ফজলে হোসেন বাদশা, আয়েন উদ্দিন, এনামুল হক, ডা. মনসুর রহমান, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার প্রমুখ।

ই-বার্তা// আরাফাত ইসলাম শুভ