৩২৮ ফুট সুনামি ঘটিয়ে তছনছ করে দিতে পারেন পুতিন!

ই-বার্তা ।।  রাশিয়া নাকি ভয়ংকর এক অস্ত্র তৈরি করেছে। যেটি কিনা ঘুম হারাম করে দিয়েছে পশ্চিমা শক্তির। অস্ত্রটি পারমাণবিক শক্তি চালিত একটি ড্রোন সাবমেরিন।

এর বিধ্বংসী ক্ষমতা ও তেজস্ক্রিয়তা পুরো বিশ্বের জন্যই মারাত্মক বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। বলা হচ্ছে, পুজেইদন বা স্ট্যাটাস-৬ নামের এই সাবমেরিনটি গভীর সমুদ্রের তলদেশে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১০০ মিটার বা ৩২৮ ফুট উঁচু সুনামি তৈরি করতে পারে। আর তাহলেই পৃথিবীজুড়ে সৃষ্টি হবে এক নারকীয় তাণ্ডবের। এই অস্ত্রকে বলা হচ্ছে ‘ডুমসডে মেশিন’।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্ট্যাটাস-৬ নামের এই ড্রোনটি ১০০ মেগাটনের পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম যেখানে কিননা সাগরের তলদেশে ৫০ মেগাটনের বোমা ফাটালেই তোলপাড় ঘটে যাওয়ার কথা। বলা হচ্ছে রাশান অস্ত্রটি ১শ মিটার বা ৩২৮ ফুট উঁচু সুনামি সৃষ্টি করে নিশ্চিহ্ন করে দেবে উপকূলবর্তী শহর।

গত মাসেই মস্কোতে এক ভাষণে এই মারণাস্ত্রের কথা জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জানান, ড্রোনটি ৫৬ নটিক্যাল মাইল গতিতে ৬ হাজার ২শ মাইল পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। বহন করতে পারে ‘আন্তমহাদেশীয়’ মিসাইল, যা আঘাত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো অঞ্চলে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, তাদের তেরি মনুষ্যহীন সাবমেরিন প্রচলিত পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারে, যা বিমানঘাঁটি, উপকূলবর্তী দুর্গ, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

পদার্থবিজ্ঞানী ও পারমাণবিক বোমা বিশেষজ্ঞ রেক্স রিচার্ডসনের মতে, এই বিশেষ পারমাণবিক অস্ত্রের দ্বারা সৃষ্ট সুনামি ২০১১ সালের জাপানের সুনামির চেয়েও ভয়াবহ হবে। জাপানে ২০১১ সালে ভূমিকম্প ও পরে সুনামিতে ১৫ হাজারের বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছিল। শুধু সুনামিই নয়, এই সাবমেরিনে থাকা পারমাণবিক বোমার ফলে সাগরের পানি বৃষ্টি হয়ে ঝরবে উপকূলীয় শহরে। এর সাথে মিশে থাকা তেজস্ক্রিয় কণা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হবে।

এই অস্ত্রটিকে সমুদ্রতলের বহুমুখী সিস্টেম স্ট্যাটাস-সিক্স মনে করা হচ্ছে, যা কেনিয়ন বা পৃথিবী ধ্বংসের অস্ত্র নামেও পরিচিতি পাচ্ছে।

লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ পদার্থবিদ গ্রেগ স্প্রিগস অবশ্য এই অস্ত্র নিয়ে অতটা ভীত হতে রাজি নন। তার মতে এটা অপচয় বলে গণ্য হতে পারে। তিনি বলেন, ২০১১ সালে জাপানে সুনামির কারণে ৯৩ লাখ মেগাটন পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিল। এই ছড়িয়ে পড়ার পরিমাণ ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি। রাশিয়ার এই অস্ত্রটি বিস্ফোরিত হলে এর নির্দেশনা সাগরের তীরের দিকে হবে না। এটার অধিকাংশই আবার সমুদ্রে ফিরে গিয়ে অপচয় হবে।

স্ট্যাটাস-সিক্সের অস্তিত্বের ব্যাপারে ‘সুনির্দিষ্ট’ কিছু জানাননি পুতিন। এটিকে নতুন ধরনের কৌশলগত অস্ত্র তৈরির সূচনা হিসেবে বলেই ক্ষ্যান্ত দিয়েছেন। অবশ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক পারমাণবিক অস্ত্রের পর্যালোচনায় এমন অস্ত্রের অস্তিত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে, ঘটনা যাই হোক নিত্য-নতুন অস্ত্রের ভারে যে গোটা বিশ্ব আরও ঝুঁকির দিকে ধাবিত হচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।