পাকিস্তানের কোন রাষ্ট্রপ্রধানই ৫ বছর স্থায়ী হতে পারেনি!

ই-বার্তা।। বুধবারের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একাধারে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতার পালাবদল হতে যাচ্ছে। দেশটির ৭১ বছরের ইতিহাসে এটা একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়ে দেশটির জন্ম হলেও সে স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে। সাত দশকের অর্ধেক সময় ধরেই দেশ শাসন করেছে চার সামরিক সরকার। ১৮ জন প্রধানমন্ত্রীর কেউই ৫ বছরের ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি।

 

পাকিস্তানের ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা তুলে ধরা হল- 

১৪ আগস্ট, ১৯৪৭ : স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ

১১ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৮ : মৃত্যুবরণ করেন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ।

১৬ অক্টোবর, ১৯৫১ : পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডি শহরে এক সমাবেশে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান।

৭ অক্টোবর, ১৯৫৮ : সংবিধান বিলুপ্ত করে সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা। প্রধান প্রশাসক হন সেনাপ্রধান জেনারেল আইয়ুব খান।

২৭ অক্টোবর, ১৯৫৮ : প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জাকে পদত্যাগে বাধ্য করেন আইয়ুব খান। ব্রিটেনে নির্বাসনে পাঠানো হয় তাকে। নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন আইয়ুব খান।

২৫ মার্চ, ১৯৬৯ : আইয়ুব খানের শাসনের বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) গণঅভ্যুত্থান। গণআন্দোলনের মুখে সেনাপ্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। প্রেসিডেন্ট হন ইয়াহিয়া।

৭ ডিসেম্বর, ১৯৭০ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করেন ইয়াহিয়া। পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়।

২০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ : পদত্যাগ করেন ইয়াহিয়া খান। প্রেসিডেন্ট হলেন জুলফিকার আলি ভুট্টো। সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা গৃহীত হয়। প্রধানমন্ত্রী হন ভুট্টো।

৫ জুলাই, ১৯৭৭ : অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন জেনারেল জিয়াউল হক।

৪ এপ্রিল, ১৯৭৯ : জেনারেল জিয়াউলকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ফাঁসি দেয়া হয় ভুট্টোকে।

১৭ আগস্ট, ১৯৮৮ : রহস্যজনক এক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান জিয়াউল হক।

১৬ নভেম্বর, ১৯৮৮ : ভুট্টোকন্যা বেনজির ভুট্টো পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

৬ আগস্ট, ১৯৯০ : দুর্নীতি ও সরকারের বিশৃঙ্খলার অভিযোগে বেনজির ভুট্টোর সরকার ভেঙে দেয়া হয়।

২৪ অক্টোবর, ১৯৯০ : প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নওয়াজ শরিফ।

১৯ এপ্রিল, ১৯৯৩ : দুর্নীতির অভিযোগে নওয়াজের সরকারকে ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসহাক খান।

৫ নভেম্বর, ১৯৯৬ : দুর্নীতির অভিযোগে আবারও ভেঙে দেয়া হয় বেনজির ভুট্টোর সরকারকে।

৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭ : দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন নওয়াজ শরিফ। দুর্নীতির বিচার এড়াতে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান বেনজির।

১২ অক্টোবর, ১৯৯৯ : রাক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন সেনাপ্রধান পারভেজ মোশাররফ। নির্বাসনে পাঠানো হয় নওয়াজকে।

১০ অক্টোবর, ২০০২ : মোশাররফের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন জাফরুল্লাহ জামালি।

২৩ আগস্ট, ২০০৪ : মোশাররফের সঙ্গে দ্বন্দ্বে^ জাফরুল্লাহ পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রী হন শওকত আজিজ।

৫ অক্টোবর, ২০০৭ : বেনজির ও নওয়াজকে দেশে ফেরার সুযোগ দেন মোশাররফ।

৩ নভেম্বর, ২০০৭ : জরুরি অবস্থা জারি করেন মোশাররফ।

২৭ ডিসেম্বর, ২০০৭ : রাওয়ালপিন্ডির এক সমাবেশে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন বেনজির ভুট্টো।

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ : সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয় পাকিস্তান পিপলস পার্টি। প্রধানমন্ত্রী হন ইউসুফ রাজা গিলানি।

৬ সেপ্টেম্বর, ২০০৮ : বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলি জারদারি প্রেসিডেন্ট হন।

২ মে, ২০১১ : পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের মার্কিন নেভি সিলের অভিযানে নিহত হন আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেন।

১৯ জুন, ২০১২ : গিলানিকে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করেন সুপ্রিমকোর্ট

২২ জুন, ২০১২ : প্রধানমন্ত্রী হন রাজা পারভেজ আশরাফ।

১১ মে, ২০১৩ : নির্বাচনে নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ বড় ব্যবধানে জয়ী হয়। তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হন নওয়াজ।

২৮ জুলাই, ২০১৭ : দুর্নীতির অভিযোগে নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করেন সুপ্রিমকোর্ট।

১ আগস্ট, ২০১৭ : প্রধানমন্ত্রী হন নওয়াজের সহযোগী শহিদ খাকান আব্বাসি।

৩১ মে, ২০১৮ : ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করে নওয়াজের দল পিএমএল-এন। ২৫ জুলাই নির্বাচন ঘোষণা করা হয়।

৬ জুলাই, ২০১৮ : দুর্নীতিবিরোধী আদালত (ন্যাব) নওয়াজকে ১০ বছর ও কন্যা মরিয়ম নওয়াজকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়।

১৩ জুলাই, ২০১৮ : লন্ডন থেকে দেশে ফিরেই লাহোর বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন নওয়াজ ও মরিয়ম।

 

 

ই-বার্তা/ডেস্ক রিপোর্ট