অগ্নিঝুঁকিতে রাজধানী, সর্বত্রই উদাসীনতা

ই-বার্তা ডেস্ক।।  একের পর এক অগ্নিকান্ডে ঝরছে মূল্যবান প্রাণ।  পুরান ঢাকা থেকে শুরু করে বনানীর মতো অভিজাত এলাকাও বাদ যাচ্ছে না।  অগ্নিকাণ্ডের পর তাৎক্ষণিকভাবে কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও কিছুদিন পর সেই আগের অবস্থায় চলতে থাকে সবকিছু।  সামগ্রিকভাবে কোনো কিছু গড়ে উঠছে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবস্থা এতটাই খারাপ যে ২০১০ সালে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা আধুনিকায়নের কাজ শুরু হলেও গত ৯ বছরেও তা চূড়ান্ত হয়নি। কয়েক দশক ধরে রাজধানীকে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী করার কাজটি সম্পন্ন করা হলেও অগ্নি নির্বাপণের জন্য নেই ন্যূনতম প্রস্তুতিও।

বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, নগরীর ফুটপাতে জলাধার রাখা আদর্শ মহানগরীর অন্যতম শর্ত। পানির অভাবে আগুন নেভাতে দমকল বাহিনীর বেগ পাওয়ার বিষয়টি প্রতিনিয়তই চোখে পড়ছে। অথচ সব ক্ষেত্রেই উদাসীনতার চিত্র।

কথা হয় বিশিষ্ট নগরপরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবীবের সঙ্গে। তিনি  সাংবাদিকদের বলেন, ৪ থেকে ৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য বিদ্যমান ইমারত নির্মাণ বিধিমালা দিয়ে নির্মিত হচ্ছে ১০-২০ তলা ভবন। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সময়োপযোগী করতে ২০১০ সালে বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়। দীর্ঘ ৫ বছর গবেষণার পর খসড়া প্রস্তুত হয় ২০১৫ সালে। এরপর চার বছর কেটে গেলেও চূড়ান্ত হয়নি।

রাজধানীর ভবনগুলোতে সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় একটি কমপ্লায়েন্স কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রানা প্লাজার পর গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোকে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক ভবনে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, রাজউককে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ না বলে, রাজধানী অবনয়ন কর্তৃপক্ষ বলাই ভালো। ভবন নির্মাণের সময় নকশা অনুযায়ী বিদ্যুতায়ন ও এয়ারকন্ডিশন ব্যবস্থা, ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম, বহির্গমনের পথ, স্বয়ংক্রিয় অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে রাজউককেই।

ফায়ার সার্ভিসের সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান জানান , উঁচু ভবনের জন্য আমাদের ল্যাডারের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আধুনিক আরও যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। ফায়ার স্টেশন বাড়াতে হবে, যাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় নষ্ট না হয়।

ই-বার্তা / আরমান হোসেন পার্থ