এবারের গোল্ডেন বল কার?

ই-বার্তা।।  ফাইনালে পৌঁছানো ফ্রান্সের এমবাপ্পের সামনে নিজেকে আরো উচ্চতায় তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। লুকা মডরিচও কিন্তু এমবাপ্পেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন। এজন্য ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে তুলতে হবে দলকে (গত রাতে হয়ে যাওয়া ওই ম্যাচের ফলাফল অবশ্য এরই মধ্যে সবার জানা)। শুরু থেকে আলো ছড়ানো এডেন হ্যাজার্ড ও কেভিন ডি ব্রুইনাও এ পুরস্কারের দাবিদার। সেমিফাইনালে হেরে দর্শক বনে যাওয়া তারা অবশ্য খানিক পিছিয়ে থাকছেন। বিস্ময়কর হলেও এ তালিকায় নেইমারও আছেন।

কিলিয়ান এমবাপ্পে

সন্দেহাতীতভাবেই এমবাপ্পে এবারের আসরের সেরা তরুণ প্রতিভা। গ্রুপ পর্বে পেরুর বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল করেন পিএসজি তারকা। আর্জেন্টিনা রক্ষণকে নাকাল করে জোড়া গোলও করেছেন ১৯ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ড। তার কল্যাণেই সাত গোলের থ্রিলার জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে আসে ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়নরা। আর্জেন্টিনা ম্যাচ এমবাপ্পেকে সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার হিসেবে জোড়া গোল করার রেকর্ডে পেলের পরই স্থান দিয়েছে।

৪৪২ মিনিট খেলা মোনাকোর যুব প্রকল্পে বেড়ে ওঠা এ ফরোয়ার্ড গোল করেছেন তিনটি। ওই তিন গোল করতে পোস্টের টার্গেটে মাত্র পাঁচটি শট নিয়েছেন ট্রান্সফার বাজারের দ্বিতীয় সেরা এ ফুটবলার। তার সঠিক পাস সংখ্যা ছিল ১০৯। যার নয়টি ছিল প্রতিপক্ষ গোলমুখে বিপজ্জনক পাস। ড্রিবলিং সাফল্য ৬১ শতাংশ, ট্যাকলে ১০০ ভাগ সফল তিনি। কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে পোস্টের নিশানা খুঁজে না পেলেও এখনো গোল্ডেন বলের অন্যতম দাবিদার হিসেবেই আছেন এমবাপ্পে।

লুকা মডরিচ

প্রাক-বিশ্বকাপ আলোচনায় সেরা মিডফিল্ডার হিসেবে বারবার উচ্চারিত হয়েছে লুকা মডরিচের নাম। সেমিফাইনাল পর্যন্ত দুর্দান্ত খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। ৪২৪ মিনিট মাঠে থাকা এ মিডফিল্ডার ২৯৪টি পাস দিয়েছেন সতীর্থদের। পাস দেয়ায় সাফল্যের হার ৮৬ শতাংশ। ড্রিবলিংয়ে

সাফল্যের হার ৭৬ শতাংশ। ট্যাকল করার ক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৪৩ শতাংশ। প্রতিপক্ষ গোলমুখে বিপজ্জনক পাস সংখ্যা ১৪। প্রতিপক্ষ আক্রমণ রুখে দেয়ার সংখ্যা ৭। এছাড়া প্রতিপক্ষের আক্রমণ ক্লিয়ারও করেছেন দুটি।

এডেন হ্যাজার্ড

জাপানের বিপক্ষে ০-২ গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর বিদায়ের শঙ্কায় থাকা বেলজিয়ামের ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচের নায়ক ছিলেন হ্যাজার্ড। ৪২৭ মিনিটে খেলা এ প্লে-মেকারের সঠিক পাস সংখ্যা ১৭৫, যার ১২টি ছিল গোলমুখে বিপজ্জনক পাস। গোলে নেয়া শটের ৪৫ শতাংশই টার্গেটে ছিল। ড্রিবলিংয়ে সাফল্যের হার ৭৮ শতাংশ, ট্যাকলে সাফল্য শতভাগ!

কেভিন ডি ব্রুইনা

বিশ্বকাপে ৪৫০ মিনিট খেলা ডি ব্রুইনার সঠিক পাস সংখ্যা ২১৩। ৭১ শতাংশ ড্রিবলিংয়ে সফল ম্যানচেস্টার সিটি তারকা। ট্যাকলের ক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৫৭ শতাংশ। আক্রমণে জোগান দেয়ার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের পাঁচটি আক্রমণও ক্লিয়ার করেছেন এ ফরোয়ার্ড। ডি ব্রুইনাকে অবশ্য এসব পরিসংখ্যানের বাইরে ম্যাচ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দুর্দান্ত ক্ষমতার কারণে এগিয়ে রাখছেন অনেকে।

বেলজিয়ান তারকা সম্পর্কে বলছিলেন ফরাসি সমর্থক আর্থার জুলস, ‘বিশ্বকাপে মানসম্পন্ন ফুটবলার অনেক রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি হয়তো মেসি, নেইমার, রোনালদো, এমবাপ্পেদের নাম শুনবেন। কিন্তু ম্যাচ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষমতাসম্পন্ন ফুটবলার কিন্তু হাতে গোনা দুয়েকজন। তাদের অন্যতম ডি ব্রুইনা। এমন ফুটবলারকে স্কোয়াডে পাওয়া যেকোনো কোচের জন্যই সৌভাগ্য। ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালে আমরা এ প্লে-মেকারকে নিয়ে উত্কণ্ঠায় ছিলাম।’

নেইমার জুনিয়র

ছন্দের দিক থেকে রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিল ছিল রোলার-কোস্টার। উজ্জ্বল সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনালেই বিদায় নিতে হয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। ব্রাজিলের বিদায়ের পরও নেইমারকে গোল্ডেন বলের দাবিদার হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। সেটা তার বিভিন্ন ম্যাচ পরিসংখ্যানের কারণে। ২ গোল করা পিএসজি তারকা ফিরমিনোকে দিয়ে করিয়েছেন আরেকটি। তার সফল পাসসংখ্যা ছিল ২১৩। পাস দেয়ার সাফল্য ৮৫ শতাংশ, গোলে নেয়া শটের ৭২ শতাংশ টার্গেটে ছিল। ড্রিবলিং সাফল্য ৫৬ শতাংশ ও ট্যাকল সাফল্য ৬০ শতাংশ। ম্যাচপ্রতি পাসের হার ৪৯ দশমিক ৩। এসব পরিসংখ্যানের কারণেই হিসাবের মধ্যে রাখা হচ্ছে তাকে।