ফেসবুকে স্ট্যাটাস আত্মহত্যা‘আমার মৃত্যুর জন্য ৪ জন দায়ী ’

ই-বার্তা ।। কুমিল্লার কাবিলা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজের এক কক্ষ থেকে বাপ্পি দাস নামে এক অফিস সহকারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৭ এপ্রিল) সকালে উক্ত কক্ষ থেকে বাপ্পির লাশ উদ্ধার করা হয়।

বাপ্পি দাস তার মৃত্যুর আগে ফেসবুকে ৪ জনের ছবি দিয়ে স্ট্যাটাসে দেন। স্ট্যাটাসে বাপ্পি লেখেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য এ ৪ জন দায়ী। ইব্রাহিম আমাকে ইরাক থেকে ফোন করে মেরে ফেলার হুমকী দেয় এবং আমার ফ্যামিলিকেও মেরে ফেলবে বলেছে। তার ফোন করা ও থ্রেট দেওয়ার সব রেকর্ড আমার কাছে আছে। প্রথম হলো ইব্রাহিম পিতা নুরুল ইসলাম, গ্রাম ভূবনগড়। দ্বিতীয় হলেন খুকি গ্রাম চর্থা বড় পুকুরপাড়, তৃতীয় হলেন ইমরান হোসেন গ্রাম চান্দিনা, রেজিষ্টার অফিসে কম্পিউটারের কাজ করে। চতুর্থ হলেন ফাহিম সরকার গ্রাম মুরাদনগর। সে ইমরানের সাথে সব সময়। তাদের ছবি দেওয়া হলো। আমি তাদের সুষ্টু বিচার চাই প্রশাসনের কাছে।’

পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়া বাগান বাড়ির এলাকার উত্তম চন্দ্র দাসের পুত্র বাপ্পি দাস (৩০) দীর্ঘদিন ধরে বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের কাবিলা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজে এম এল এস পদে কাজ করে আসছিলেন। সে ইস্টান মেডিকেল কলেজের ডা: করিম উল্লাহ এর অফিস সহকারি হিসেবে কাজ করেছেন।

শুক্রবার (৬ এপ্রিল) রাতে ডিউটি শেষে বাপ্পি দাস ভোর ৬টায় হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ডা: করিম উল্লাহ এর কক্ষে যায়। শনিবার সকাল ৯টায় হাসপাতালের লোকজন ডা: কক্ষে দরজা খুলতে গিয়ে বন্ধ পায়। অনেক চেষ্টা করেও দরজা খুলতে না পেরে হাসপাতালের লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে বুড়িচং থানার ওসি তদন্ত (পরিদর্শক) মেজবাহ উদ্দিন ভূইয়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আবু ইউসুফ ফসিউজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সসহ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় কক্ষের মধ্যে সিলিং ফ্যানের সাথে বাপ্পি দাসের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় তারা। পরে পুলিশ লাশ নামিয়ে একটি সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশ প্রেরণ করে।

এদিকে বাপ্পি দাসের ব্যবহৃত ফেসবুক থেকে ভোর ৪ টায় তার এই মৃত্যু নিয়ে ৪টি ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগে অনেকে স্ট্যাটাস দেয়।

এ বিষয়ে বুড়িচং থানার ওসি তদন্ত (পরিদর্শক) মেজবাহ উদ্দিন জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বাপ্পি দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ কক্ষ থেকে ২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে পাওয়া তথ্যগুলো দিয়ে সঠিক ঘটনা বের করার তদন্ত অব্যহত রয়েছে। এ ঘটনার ওপর ভিত্তি করে বুড়িচং থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা রজু করা হয়েছে।