ভারতে মুসলিম পুলিশ সদস্যদের দাড়ি কামিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ!

ই-বার্তা ডেস্ক।। ভারতে কয়েকজন মুসলিম পুলিশ সদস্যকে দাড়ি কামিয়ে ফেলার নির্দেশনা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস ও ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, শৃঙ্খলা রক্ষার নামে রাজস্থানের আলওয়ারের ৯ মুসলিম পুলিশ সদস্যকে দাড়ি কামিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ এক নির্দেশে তা খারিজ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। নতুন নির্দেশে বলা হয়, পুলিশকর্মীদের দাড়ি রাখার নিয়ম নেই। তাতে গোটা পুলিশবাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ধর্মীয় প্রথা পালন করতে গিয়ে দেখা দিল তাদের চাকরি নিয়ে ঘোর সংশয়। পরে অবশ্য ধর্মীয় রেওয়াজকে স্বীকৃতি দিয়ে আলওয়ার পুলিশ বিভাগ ওই ৯ পুলিশকর্মীকে দাড়ি রাখার অনুমতি দেয়।

পুলিশ সুপার প্যারিস দেশমুখ জানিয়েছে, তারা এর আগে ৩২ জন মুসলিম কর্মীকে দাড়ি রাখার অনুমতি দিয়েছিল। বৃহস্পতিবারের আদেশে তাদের মধ্যে নয়জনের অনুমতি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। বাকি ২৩ পুলিশ সদস্যকে তাদের দাড়ি রেখে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। নতুন নির্দেশ হাতে পেয়ে ধর্মীয় প্রথা মেনে দাড়ি রাখবেন, না কি পেশার খাতিরে পরম্পরাকে বিদায় জানাবেন, এমনই কঠিন বিড়ম্বনায় পড়েন ইসলাম ধর্মাবলম্বী ৭ কনস্টেবল, এক হেড কনস্টেবল এবং এক সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর।

জেলা পুলিশ সুপার প্যারিস দেশমুখ জানিয়েছেন, আগে অনুমতি দেয়া হলেও পক্ষপাতহীন কর্তব্য পালনের উদ্দেশেই মুসলিম পুলিশকর্মীদের দাড়ি না রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। ভারতীয় পুলিশ প্রশাসনের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী, বিভাগীয় প্রধান মনে করলে পুলিশকর্মীরা দাড়ি রাখতে পারেন। নির্দেশের গেরোয় পড়া ওই নয় কর্মীর মতামত নিতে তাদের সঙ্গে কথা বলেন সুপার। বোঝা যায়, দাড়ি ফেলে দেয়ার নির্দেশ পেয়ে রীতিমতো তারা মুষড়ে পড়েছেন।

পরিস্থিতি বিচার করে মুসলিম কর্মীদের স্পর্শকাতর মানসিকতাকেই গুরুত্ব দেন সুপার। সর্বশেষ শুক্রবার আগের নির্দেশ বাতিল করে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের আবার দাড়ি রাখার অনুমতি জারি করেন আলওয়ারের পুলিশ সুপার প্যারিস দেশমুখ। এই সিদ্ধান্তের কথা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া আসে। আলওয়ারের মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতা শের মোহাম্মদ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, দাড়ি ফেলে দেয়ার নির্দেশটি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এবং পুলিশ বিভাগের একটি ‘ভুল নির্দেশনা’। কারণ এটির মাধ্যমে ধর্মীয় ঐতিহ্যকে অসম্মান করা হয়।