ভিপি পদে জয়ের খবর পেয়ে যা বললেন নুর

ই-বার্তা।।  সবাইকে চমকে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে জয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুর। সোমবার গভীর রাতে নির্বাচন কমিশন যখন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করে, তখন হাসপাতালের বেডে শয্যাশায়ী শিক্ষার্থীদের জনপ্রিয় এ মুখ।

এ নির্বাচন নিয়ে নুরের অভিমত- ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছে। এই নির্বাচন পুরো দেশবাসীকে হতাশ করেছে।

ডাকসু নির্বাচনের দিন সোমবার দুপুরে রোকেয়া হলে ‘ভোটের অনিয়মের’ প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন নুর। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন সমর্থকরা। এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন কোটা সংস্কার আন্দোলনের এ নেতা।

২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে অন্য সব পদে ছাত্রলীগের প্যানেল নিরঙ্কুশ জয় পেলেও সর্বোচ্চ পদে চমক দেখিয়েছেন নুরুল হক নুর। চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে নির্বাচন করা এ নেতা জয়ী হয়েছেন বিপুল ভোটে।

ডাকসু নির্বাচনে নুরের প্রাপ্ত ভোট ছিল ১১ হাজার ৬২টি । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হেভিওয়েট প্রার্থী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ১৯৩৩ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হন নুর। শিক্ষার্থীরা বলছেন ভিপি পদে নীরব ভোট বিপ্লব হয়েছে।

হাসপাতালের বেডে শুয়েই ভিপি পদে জয়ের খবর পান নুর। ‘প্রহসনের ভোটে’ প্যানেলের সব প্রার্থীর পরাজয়ের মাঝে ভিপি পদে এ জয় যে তাকে খুব একটা খুশি করতে পারেনি সেটি বোঝা গেল তার কথায়।

সোমবার রাত ৩টার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় নুর বলেন, এ রকম নির্বাচন আমাদের কারোরই প্রত্যাশা ছিল না। প্রায় তিন যুগ পর এই নির্বাচন হলো। সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে ছিল এই ভোটে। কিন্তু প্রত্যাশিত ভোট হয়নি। ডাকসু নির্বাচন কলংকের ইতিহাস সৃষ্টি করল।

‘জাতীয় নির্বাচনের পর নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর মানুষের যে অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছিল— আমরা ভেবেছিলাম সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে আশার আলোর সঞ্চার করা হবে’-যোগ করেন নুর।

কারচুরি অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, প্রশাসনের সহায়তায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ যে কারচুপি করেছে তা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয় পুরো দেশকে হতাশ করেছে। আমরা মনে করি, ১১ মার্চের নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়।

ডাকসু নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, জালভোট, ব্যালটবাক্স ছিনতাই ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোটের দিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বর্জনের ঘোষণা দেয় নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন প্যানেল। বর্জন করা ভোটেই জয় পান নুর।

রাতে ঘোষিত ফলে দেখা গেল প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রলীগ প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে প্রায় দুই হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে ডাকসুর সহসভাপতি হয়েছেন নুর। ভোট বর্জনকারী নুর শেষ পর্যন্ত ভিপি পদে শপথ নেবেন? এই প্রশ্ন এখন শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে।