প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনে চলছে মন্ত্রিসভার বৈঠক

ই- বার্তা ডেস্ক।।   ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনে মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বিশেষ এ বৈঠক শুরু হয়।

‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শীর্ষক প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

আজ বেলা ৩টায়  মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন মিললেজাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন। এটি দেশের ৪৮তম ও বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট। আর অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি প্রথম বাজেট। যদিও গত সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে অনেক বাজেট প্রণয়নে পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।

‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’- শিরোনামের এবারের বাজেট শুধু এক বছরের জন্য নয়, তৈরি করা হয়েছে ২০৪১ সালকে টার্গেট করে। তবে এ বাজেট সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে সরকারকে মুখোমুখি হতে হবে নানা প্রতিকূলতার।

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- প্রবৃদ্ধিতে অসমতা, বিনিয়োগ সংকট, সুশাসনের ঘাটতি, ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা, অর্থনীতির আকারে রাজস্ব আদায় কম, বৈদেশিক লেনদেন ঘাটতি।

জাতীয় সংসদে যে বাজেট প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে, এর সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এ ব্যয় মেটাতে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ আয় হবে তিন লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা।

আয় ও ব্যয়ের ফারাক ঘাটতি থাকবে (অনুদানসহ) এক লাখ ৪১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া এ ঘাটতির পরিমাণ হবে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারকে। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও যুবকদের বেশ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এটি নতুন বাজেটে প্রতিফলন ঘটানো হবে।

তরুণদের জন্য রাখা হয়েছে নানা ধরনের সুযোগ। বেকারদের কর্মসংস্থানের বিকল্প হিসেবে ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ঋণ তহবিলের। এ বাজেটের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী ভোটারদের প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করবেন।

মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে আরও জানা গেছে, বাজেট প্রস্তাবে থাকছে বেশকিছু নতুন চমক। এতে থাকছে বেকারদের জন্য ঋণ তহবিল (স্ট্যাটআপ ফান্ড)। এ তহবিল থেকে স্বল্প সুদে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন বেকাররা।

এ ছাড়া কৃষকদের জন্য ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে চালু করা হবে শস্যবীমা। প্রাথমিকভাবে বেছে নেয়া হবে একটি জেলাকে। পরে এটি ছড়িয়ে দেয়া হবে সারা দেশে। এ ছাড়া নতুন উদ্যোগের মধ্যে থাকছে প্রবাসীদের জন্য বীমা সুবিধা।

পাশাপাশি মূলধনী খাতে ব্যয় হবে ৩২ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা, খাদ্য হিসাবে ৩০৮ কোটি এবং ঋণ ও অগ্রিম খাতে ব্যয়ের লক্ষ্য হচ্ছে ৯৩৭ কোটি টাকা।

এ ব্যয় মেটাতে অনুদানসহ আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে তিন লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ৩৮ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা বেশি ধরা হয়েছে। এ ছাড়া কর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা প্রস্তাব করা হচ্ছে তিন লাখ ৪০ হাজার ১০৩ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হবে না। কারণ এটি করলে অনেকে করের আওতার বাইরে চলে যাবেন। এ ছাড়া আসন্ন বাজেটে (২০১৯-২০) নতুন করে ৮০ লাখ করদাতা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হবে। বর্তমান কর দিচ্ছে এমন সংখ্যা ২০ লাখ।

এতে করের আওতায় এক কোটি লোককে আনা হবে। বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেটে (২০১৯-২০) বাড়ানো হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা। প্রায় ১৩ লাখ গরিব মানুষকে নতুনভাবে এ সুরক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে।

এতে সুবিধা পাবেন প্রায় ৮৯ লাখ গরিব মানুষ, যা চলতি বাজেটে ছিল প্রায় ৭৬ লাখ। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে আগামী বাজেটে সম্ভাব্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে পাঁচ হাজার ৩২১ কোটি টাকা।

ই- বার্তা / রেজওয়ানুল ইসলাম