সব কিছু পেয়েও স্বপ্ন পুরনের নেশায় মেসির সাধনা


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১২ই অক্টোবর ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার  | বিকাল ০৫:৩১ ফুটবল

ই-বার্তা।। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। ইস্পাত কারখানা শ্রমিকের সন্তান। মা ছিলেন একজন খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্ন কর্মী। গ্রোথ হরমোনের অভাবে শাররিক বৃদ্ধি কম ছিল। ছেলেবেলা থেকে ফুটবল খেলতে ভীষণ ভালবাসতেন। মাত্র ৫ বছর বয়স থেকে ফুটবলের প্রতি তার অনুরাগ প্রকাশ পায়। নিজের প্রতিভার যাদু দেখাতে শুরু করেন সে সময় থেকেই। বলা হচ্ছিলো বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল আন্দ্রেস লিও মেসির কথা। যাকে আমরা লিওনেল মেসি হিসেবেই চিনি।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা থেকে খেলার জন্য ডাক পান। বার্সেলোনা শর্ত দেয়, মেসি যদি বার্সেলোনার হয়ে খেলেন তবে বার্সেলোনা তার চিকিৎসার সব খরচ বহন করবে। মেসির বাবা-মার পক্ষে তার চিকিৎসা খরচ বহন করা কষ্ট সাধ্য ছিলনা বিধায় তিনি ও তার পরিবার এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।

মাত্র ১৮ বছর বয়সে মেসি আর্জেন্টিনার সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ করে নেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি ফিফার বেলদ ডি অর এবং ফিফার বর্ষ সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মনোনীত হন। এবং ঠিক তার পরের বছরই তিনি ফিফার বর্ষ সেরা খেলোয়াড় ও ব্যলন ডি’অর এর পুরস্কার জিতে নেন।

২৪ বছর বয়সের মধ্যেই তিনি বার্সেলোনার সর্বচ্চ গোলদাতার খেতাব টি নিজের করে নেন। ২৫ বছর বয়সের মধ্যে লা লিগায় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ২০০ গোল করেন। ২০১৪ সালে তিনি ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে ৪০০ গোল করেন এবং লা লিগা ও চ্যম্পিয়ন্স লীগের সর্বকালের সর্বচ্চ গোল দাতার খেতাবটিও নিজের ঝুলিতে নিয়ে নেন। ২০১৭ সালের মে মাসে তিনি বার্সেলোনার হয়ে নিজের ৫০০ তম গোলটি করেন।

মেসি প্রথম এবং একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা চারটি চ্যাম্পিয়নস লীগে সর্বোচ্চ গোল প্রদান করেছেন। এই প্রতিযোগিতায় তার সর্বোচ্চ হ্যাট্রিকেরও রেকর্ড রয়েছে ৪টি। ২০১২ সালের মার্চে চ্যাম্পিয়নস লীগে বেয়ার লেভারকুজেনের বিপক্ষে খেলায় পাঁচ গোল করে মেসি ইতিহাস গড়েন। একই বছর নভেম্বরে, সেভিয়ার বিপক্ষে হ্যাট্ট্রিক করার মাধ্যমে ২৫৩ গোল নিয়ে তিনি লা লিগার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার গৌরব অর্জন করেন।

ব্যক্তি জীবনে মেসি ঘুমাতে ভীষণ পছন্দ করেন। বিয়ের আগ পর্যন্ত তার ঘর বেশ অগোছালো থাকত। তার নাকি অগোছালো ভাবে থাকতে বেশি ভাল লাগে। অগোছালো ভাবে যত্রতত্র ভাবে তিনি তার ব্যবহৃত জিনিস গুলো ফেলে রাখলে নাকি খুব সহজে খুজে পান। অবশ্য এই সুবিধা থেকে তিনি বিঞ্চিত হয়েছেন তার বান্ধুবির সাথে সংসার শুরু করার পর থেকে। অবশ্য এখন তিনি তার স্ত্রী। তার স্ত্রীর সাফ কথা, ঘর গোছান থাকতে হবে। যা প্রয়োজন তা যেন তিনি তার স্ত্রীর কাছ থেকে চেয়ে নেন।

গান শুনতে ভালবাসেন মেসি। ভালবাসেন ভিডিও গেমস খেলতে ও বই পড়তে। পরিবারকে ভীষণ ভালবাসেন। প্রচুর সময় কাঁটাতে ভালবাসেন পরিবারের সাথে। খেলার পর পরিবারই তার প্রধান প্রাধান্য। প্রিয় খাবার ইসকালপ মেলানিস সালাদ। প্রিয় বই জর্জ লুইস বর্গেসের ইল মার্টিন ফিয়ের। প্রিয় গান কলাম্বিয়া। প্রিয় খেলোয়াড় পাবলো এইমার। প্রিয় ছবি বেবি’স ডে আউট।সম্পদের হিসেবে বিপুল সম্পদের মালিক এই আর্জেন্টাইন ফুটবল খেলোয়াড়। প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক তিনি।

২০০৮ সাল থেকে মেসি তার বান্ধবী অন্তনেলা রোক্কুজোর সাথে বসবাস শুরু করেন। তাদের দুটি সন্তান। বড় ছেলে থিয়াগো, জন্ম ২ নভেম্বর ২০১২ সালে। আর ছোট ছেলে মাতেও, জন্ম ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে। ২০১৭ সালের ২৪ জুন তার ৩০ তম জন্মদিনে বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেন। ২০১৭ সালের ১ জুলাই মহা ধুমধামে তাদের বিয়ে হয়।

সম্প্রতি হ্যাট্রিক করে আর্জেন্টিনা কে বিশ্বকাপ খেলার বাছাই পর্ব ছাপিয়ে মুল পর্বে খেলার সুযোগ তৈরি করে দেন এই ফুটবল যাদুকর। তার হ্যাট্রিকে ইকয়েডর কে ৩/১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে পৌছায় আর্জেন্টিনা। জীবনের বহু অর্জনের মাঝেও বিশ্বকাপ ফুটবলটি আজও অধরা এই ফুটবল যাদুকরের। যেহেতু বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েই গেছেন। দেখা যাক সেই অর্জনটি এবার ধরা দেয় কিনা।

সর্বশেষ সংবাদ

ফুটবল এর আরও সংবাদ