এক রক্তাক্ত অধ্যায় পিলখানা ট্র্যাজেডি


ই-বার্তা প্রকাশিত: ২৭শে নভেম্বর ২০১৭, সোমবার  | বিকাল ০৪:১১ বিশেষ প্রতিবেদন

ই-বার্তা ।। পিলখানা ট্র্যাজেডি দেশের ইতিহাসে এক রক্তাক্ত অধ্যায়। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদরদপ্তরে কিছু জওয়ানের বিদ্রোহ রূপ নিয়েছিল নারকীয় হত্যাযজ্ঞে। ঘটনার নৃশংসতায় শিউরে উঠেছিল মানুষ। ওই হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন।

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯। সকাল ৯টা ২৭। পিলখানা থেকে ভেসে আসে গুলির শব্দ। প্রথমে বিডিআরের মহড়া মনে করা হলেও পরে জানা যায় বিদ্রোহের খবর। বিডিআর সদর দফতরে সেদিন ছিল বার্ষিক দরবার। আয়োজন শুরুর পরপরই অস্ত্র হাতে বিদ্রোহ শুরু করেন জওয়ানরা। অস্ত্র তাক করা হয় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের দিকে। শুরু হয় হত্যাযজ্ঞ।

সকাল এগারোটার দিকে সেনাবাহিনীর প্রথম সাঁজোয়া যান পৌঁছায় ধানমণ্ডিতে। বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীসহ দুজন সংসদ সদস্য সাদা পতাকা হাতে পিলখানায় যান। তাদের সঙ্গে বিদ্রোহী নেতারা দাবির কথা জানাতে যান প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন কিছু বিডিআর সদস্য।

২৬ ফেব্রুয়ারি ঘটনার পরদিন রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বিদ্রোহ থেকে সরে আসার জন্য বিডিআর সদস্যদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর অস্ত্র সমর্পণ করেন বিদ্রোহী জওয়ানরা।

২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পিলখানায় ঢোকে পুলিশ। এরপরই জানা যায় হত্যাকাণ্ডের ব্যাপকতা। একে একে উদ্ধার হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনের মরদেহ।

বিডিআর বিদ্রোহ নিহত ৫৭ সেনা কর্মকর্তা এবং ১৭ জন বেসামরিক। ব্যবহার হয় ৩ হাজার ৪৪১ ধরনের অস্ত্র ও
৩৬ হাজার গুলি।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর ঢেলে সাজানো হয় ২১৮ বছরের পুরোনো বাহিনী বিডিআরকে। বদলে যায় বাহিনীর নাম ও পোশাক। বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বিজিবি।

পিলখানায় বিদ্রোহের পর মামলা হয় তিনটি। এরমধ্যে হত্যা মামলায় আসামি করা হয় ৮৫০ জনকে। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ৫৬৮ জনকে সাজা দেয় বিচারিক আদালত। এতে ১৫২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

খালাস পান ২৭৮ জন। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল আসে হাইকোর্টে। শুনানি শেষে ১৩ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখে আদালত। রায়ের তারিখ দেয়া হয় ২৬ নভেম্বর।

সর্বশেষ সংবাদ

বিশেষ প্রতিবেদন এর আরও সংবাদ