আর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া সম্ভব না, জাতিসংঘে বাংলাদেশ

ই-বার্তা ডেস্ক।।  সেনাবাহিনীর হামলা-ধর্ষণ-হত্যার মুখে গত ১৮ মাসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।  আগে থেকেই আছে আরো চার লক্ষাধিক। 

এমন অবস্থায় এখন বাংলাদেশের পক্ষে মিয়ানমার থেকে আসা আর একজন রোহিঙ্গাকে নেওয়াও সম্ভব নয় বলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক।  বরং মিয়ানমার তাদের রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যে প্রত্যাবাসন চুক্তি করেছিল, সেটি এখন ‘খারাপের চেয়েও খারাপ’।  বিষয়টির দ্রুত ‘নিষ্পত্তির’ জন্য নিরাপত্তা কাউন্সিলের সহায়তা কামনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা কাউন্সিলের চলতি অধিবেশনে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমি কাউন্সিলকে অবহিত করতে চাই যে, বাংলাদেশের পক্ষে কোনোভাবেই মিয়ানমার থেকে আসা আর কোনো রোহিঙ্গা নাগরিককে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়।  ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছে এবং নানা পান্থায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে’ বলেও অভিযোগ করেন শহীদুল হক। 

২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারের কয়েকটি সেনা চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটে এবং কয়েকজন সেনাসদস্য মারা যান।  দেশটি অভিযোগ করে, রোহিঙ্গা ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা’ এ ঘটনার পেছনে রয়েছে।  এর পরই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বসতিতে তাণ্ডব শুরু করে। সেনাবাহিনীর তাণ্ডবের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার উপকূলবর্তী বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়।  

যদিও মিয়ানমার ‘জাতিগত গণহত্যার’ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে।  গত জানুয়ারি থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তাদের প্রস্তুতি ছিল বলেও জানিয়েছে।  তবে রোহিঙ্গারা বলছে, রাখাইনে ভীতিহীন নিরাপদ পরিবেশ ও নাগরিকত্ব অধিকার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তারা সেখানে ফিরতে চায় না।

জাতিসংঘ বলছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার মতো পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। বৃহস্পতিবারের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভায় পশ্চিমা অন্যান্য শক্তিও এ ক্ষেত্রে মিয়ানমারের উদ্যোগের অভাব দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছে।  তবে ভিন্ন বক্তব্য এসেছে চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে। 

জাতিসংঘে ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত কারেন পিয়ার্স নিরাপত্তা পরিষদের সভায় বলেন, ‘আমরা খুবই হতাশ… রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আর কোনো ধরনের অগ্রগতি নেই। এবং অবশ্যই সেই পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে শরণার্থীরা ফিরে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে।’

ই-বার্তা/মোঃ সালাউদ্দিন সাজু