সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও পালিত হলো আল-কুদস দিবস


ই-বার্তা প্রকাশিত: ২৪শে জুন ২০১৭, শনিবার  | দুপুর ০১:২০ রাজধানী

ই-বার্তা ।। পবিত্র নগরী বায়তুল মুকাদ্দাস হচ্ছে মক্কা মু’আযযামা ও মদীনা মুনাওয়ারার পরে ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান। যেখানে অবস্থিত ইসলামের প্রথম ক্বিবলা মসজিদুল আক্বসা। বায়তুল মুকাদ্দাস ও তাঁর আশেপাশের এলাকা তথা সমগ্র ফিলিস্তিন ভূখণ্ড বহু নবী-রাসূলের (‘আঃ) স্মৃতি বিজরিত। তাই মসজিদুল আক্বসা, বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিনের প্রতি প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত।

তবে ১৯৪৮ সালের ১৫ই মে ফিলিস্তিনে প্রতিষ্ঠিত হয় ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল। এ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই নির্যাতিত হতে থাকে ফিলিস্তিনের মুসলমানরা।

ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণ দীর্ঘদিন ধরেই তাদের আভাসভূমি ও আল-কুদস (বায়তুল মুকাদ্দাস) উদ্ধারের জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকে। তাদের এ সংগ্রামে দিশেহারা হয়ে ইসরাঈল ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে ভাঙ্গন ধরানোর জন্য ফিলিস্তিনের একটি ক্ষুদ্র অংশে সীমিত স্বায়ত্বশাসনের কথা বলে কিছু সংখ্যক নেতাকে বিভ্রান্ত করে। তথাকথিত শাস্তি আলোচনার সুযোগে তারা ফিলস্তিনের প্রকৃত সংগ্রামী নেতাদের হত্যা করে চলেছে এবং ফিলিস্তিনের নতুন নতুন এলাকা দখল করে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে। এমনকি ফিলিস্তিনে মানবিক ত্রাণসহযোগিতা পৌঁছাতে পর্যন্ত বাঁধা দিচ্ছে।

২০১১ সালে তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের ত্রাণসামগ্রীসহ জাহাজবহর ফ্লোটিলায় আক্রমণ চালিয়ে তারা ২০জন বেসামরিক ত্রাণকর্মীকে শহীদ করে। এ ধরনের অমানবিক কার্যক্রম এখনও অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া তারা ফিলিস্তিনের গাযা ভূখন্ডে বার বার বিমান হামলা চালিয়ে নারী ও শিশু-বৃদ্ধসহ এ পর্যন্ত কয়েক হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে।

বর্তমানে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও আল কুদস মুক্তির দাবীতে সোচ্চার বিশ্বের সকল ইসলামী পক্ষ। শিয়া-সুন্নী আরব-অনারবসহ সবাই বিশ্ব মুসলিমের ঐক্য ও আল কুদস ফিলিস্তিনের মুক্তির কথা বলে। এই ঐক্যে ফাটল ধরানোর বহুবিধ প্রচেষ্টা ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লব সংঘটিত হয়। এ বিপ্লবের মহান নেতা হযরত ইমাম খোমেইনী (রহঃ) মসজিদুল আক্বসাসহ সমগ্র ফিলিস্তিনের মুক্তির লক্ষ্যে মুসলিম উম্মাহকে প্রতি বছর রমযানের শেষ শুক্রবারকে ‘আল-কুদস দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য আহ্বান জানান। সেই থেকে


প্রতি বছর সারা বিশ্বে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এই আহ্বানের আবেদনকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমুন্নত রাখতে আজ রমযানের শেষ শুক্রবার বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে আল-কুদস দিবস পালিত হয়েছে।

ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন মিলনায়তনে বেলা সারে ৩টায় ‘আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষ্যে শীর্ষক সেমিনার ও বাদ জুময়া জাতীয় প্রেসক্লাবে মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শীর্ষক এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও ইসরাইল মুসলমানদের ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের প্রত্যক্ষ মদদে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গঠিত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমেরিকা মুসলিম বিশ্বের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে মুসলমানদের একে অপরের মধ্যে দ্বন্দ বাধিয়ে দিচ্ছে। কতিপয় মুসলিম রাষ্ট্রের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে সেই অস্ত্র মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।
তিনি আরও বলেন, মুসলিম রাষ্ট্রের কাছে এটম বোমা থাকলে অবৈধ আর বিশ্বের মোড়লদের কাছে থাকলে সেটা বৈধ। এই নীতি আমরা মানিনা।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সহমর্মিতা ও সমর্থন ছিল ও থাকবে। মন্ত্রী আল কুদস মুক্তির লক্ষে বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত বাংলাদেশে নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত ডঃ আব্বাস ভায়েজী দেহনাভী বলেন, মুসলমান হিসেবে ফিলিস্তিনকে সাহায্য করা প্রত্যেকের ঈমানী দায়িত্ব। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুল আলম ব্যাপারী বলেন, ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই হয়েছে মুসলমানদের দমন করার জন্য।
এছাড়াও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শওকাত হোসেন ও বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মওলানা সাইয়্যেদ হাবীব রেজা। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল আউয়াল ঠাকুর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশ-এর সহ-সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ.কে.এম. বদরুদ্দোজা।

সুত্র ঃ অল অ্যাবাউট ঢাকা

সর্বশেষ সংবাদ

রাজধানী এর আরও সংবাদ