হত্যার পর লাশ ২৬ টুকরা,আসামী বাচ্চুকে ফাঁসির আদেশ


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৫ই এপ্রিল ২০১৭, বুধবার  | দুপুর ০২:০২ অপরাধ

ই-বার্তা প্রতিবেদক ll রাজধানীর শাহবাগের নাহার প্লাজায় ১৫ বছরের এক কিশোরী রুমিকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং লাশ ২৬ টুকরা করার ঘটনায় একমাত্র আসামি সাইদুজ্জামান বাচ্চুকে (৩২) আজ বুধবার সকাল ১১টায় মৃত্তুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের চার বছর পর ঢাকার ৩ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এ রায় দেন। এছাড়াও আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে। এই মামলায় ২৩ জনের মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় আদালত এই ঘটনাকে সমাজের জঘন্যতম অপরাধ আখ্যায়িত করে বলেছেন, এ অপরাধের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাচ্চু গত বছরের ২৬ অক্টোবর জামিনে গিয়ে এখন পলাতক রয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
২০১২ সালের ১ জুন হাতিরপুলের নাহার প্লাজার ১৩ তলায় সোনালি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক সাইদুজ্জামান রুমিকে ডেকে তাঁকে নিজ কক্ষে ধর্ষণ করে হত্যা করেন। পরে দা দিয়ে ওই কিশোরীর মাথা ও দেহের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন করে ওই প্রতিষ্ঠান ও পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রাখেন। আর বাকি অংশ ফেলেন টয়লেটের কমোডে।
ঘটনার দুইদিন পর ২ জুন পুলিশ মরদেহের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অংশগুলো উদ্ধার করে এজেন্সির মালিক সাইদুজ্জামান বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক আব্দুস সামাদ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। আদালত ২০১৩ সালের ২০ মে এই মামলার বিচার শুরু করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রুমি ও আসামি সাইদুজ্জামান দুইজনেরই বাড়ি ফরিদপুরে। হত্যার দুই বছর আগে মুঠোফোনের মাধ্যমে সাইদুজ্জামান ও রুমির পরিচয় হয়। এরপর থেকে তাঁদের নিয়মিত কথা হতো। ঘটনার ১০/১২ দিন আগে রুমি মিরপুরে তার খালার বাসায় বেড়াতে আসে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সাইদুজ্জামান রুমিকে তাঁর মিরপুরের বাসা থেকে ডেকে আনেন। পরে তাঁর নিজের অফিসকক্ষে রুমিকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন।

২০১২ সালের ৫ জুন মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাতজন সাক্ষী বাচ্চুকে দোষারোপ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর দুইদিন পর বাচ্চু নিজেও ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন। বাচ্চু বলেছিলেন, ধর্ষণের পর ধরা পড়ার ভয়েই তিনি মেয়েটিকে খুন করে। এরপর খুনের আলামত গোপন করতে সারারাত ধরে মরদেহ টুকরা টুকরা করে । মানুষ যেন বুঝতে না পারে এজন্য দেহের হাড় থেকে মাংস আলদা করে সেগুলো পাশের বিল্ডিংয়ের ছাদ ও রাস্তায় ফেলে দেন। নাড়িভূড়িগুলো বাথরুমে কমোডে ফেলে ফ্লাশ করে দেয়।’
দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আজ এই রায় দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

অপরাধ এর আরও সংবাদ