স্বাধীন দেশে শোকাবহ আগস্ট


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১৫ই আগস্ট ২০১৭, মঙ্গলবার  | দুপুর ১২:২২ রাজনীতি

ই-বার্তা ।। একটি স্বাধীন দেশ। ঘুম ভাঙলো স্বাধীন দেশের দেশাত্মবোধক গান শুনে। রাস্তায় রাস্তায় প্যান্ডেল খাটিয়ে সেইসব গান বাজানো হচ্ছে যেসব ১৯৭১ সালে মানুষকে সাহস দিয়েছিল দেশের জন্য যুদ্ধ করতে। সেইসব গান কানে আসছে যেসব গান দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আনন্দে গাইছিলো আমাদের শিল্পীরা। আর শোনা যাচ্ছে একটি বলিষ্ঠ কণ্ঠ। একটি রক্ত গরম করা আহবান। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়। যুদ্ধ শেষ। স্বাধীন দেশ আমরা পেয়েছি। কিন্তু কিছু পেতে হলে কিছু হারাতে হয় এই কথাটি যে এভাবে আমাদের সাথে মিলে যাবে কোনোদিন কি ভাবতে পেরেছিল বাংলার মানুষ? সেই বলিষ্ঠ কন্ঠটি এখন রেকর্ডে বাজে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মাঝে নেই, এখনো মানতে কষ্ট হয়।

আজ সেই ১৫ আগস্ট। বাঙালির জন্য এক শোকাবহ দিন। ৪২ বছর আগে এই দিনে বাঙালি জাতির স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় ইতিহাস কলঙ্কিত হয়েছে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে এভাবে দেশের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে বাঙালি জাতিকে ধ্বংস করার প্রয়াস চালিয়েছিল দেশদ্রোহী ঘাতকচক্র ও কিছু উচ্চাভিলাষী সেনাসদস্যরা। সেদিন হত্যা করা হয়েছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসকে। তবে আজ এত বছর পর অন্তত এইকথা আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি, জাতির জনক হত্যার বিচার বাংলার মাটিতে হয়েছে।

বাবা–মার আদরের খোকা শেখ মুজিবের শৈশবকাল কাটে টুঙ্গিপাড়ায়। ১৮ বছর বয়সে বেগম ফজিলাতুননেছার সাথে তাঁর বিয়ে সম্পন্ন হয়। তাদের দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা এবং তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল।

শেখ মুজিবুর রহমানই বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক নেতা যিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের জাতির জনক। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি “শেখ মুজিব” এবং “শেখ সাহেব” হিসাবে বেশি পরিচিত এবং তার উপাধি ‘বঙ্গবন্ধু’। ভাগ্যক্রমে ভয়াবহ কালো সেই রাতে দেশের বাইরে থাকায় বেচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। কিন্তু বাবার পাশে থাকায় ছোট্ট শেখ রাসেলও রেহাই পায়নি মৃত্যুর হাত থেকে। এই ভয়াবহ সজন হারানোর ব্যাথায় মুষড়ে পড়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, এই বাংলার মাটিতেই তার পিতার খুনীদের সাজা হবে। তিনি নিজে তা বাস্তবায়ন করবেন। শেখ হাসিনা পেরেছেন তার কথা রাখতে। জাতি আজ কিছুটা হলেও কলঙ্কমুক্ত।


শেখ মুজিব ও তার পরিবারের আত্মার মাফফিরাত কামনায় সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে মিলাদ মাহফিল ও দুস্থদের খাওয়ানোর আয়োজন করেছে দেশবাসী। বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর স্মরণে স্মরণসভা ও বইমেলার আয়োজন করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

সর্বশেষ সংবাদ

রাজনীতি এর আরও সংবাদ