ইয়াসমিনের ভরসা হত্যা করেছিলো পুলিশ


ই-বার্তা প্রকাশিত: ২৪শে আগস্ট ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার  | দুপুর ১২:২৪ দেশ

ই-বার্তা ডেস্ক।। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে যেমন অনেক কিছুই লেখা থাকে তেমনি কলঙ্কের কালি মাখা লেখাও থাকে। দূর্ভাগ্যজনকভাবে আজ তেমনি একটি দিন। ২২ বছর আগের ইতিহাসের এই দিনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী পুলিশের হাতেই আইন হত্যা হয় লজ্জাজনক ভাবে। তিনজন পুলিশ সদস্য ইয়াসমিন নামের এক তরুণীকে হেফাজতের নামে ধর্ষণ ও পরে নির্মমভাবে হত্যা করে আজকের এই দিনে।

ঘটনাটি ঘটে দিনাজপুরে। এই ঘটনার পর ক্রোধে ফেটে পড়েছিল দিনাজপুর। বিক্ষুব্ধ জনতা ২৭ আগস্ট প্রতিবাদ করতে আসলে তাদের উপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে দিনাজপুর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এই গুলিতে নিহত হন সামু, সিরাজ ও কাদের। এছাড়া আহত হন শতাধিক মানুষ। বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় অন্যতম জঘণ্য একটি ঘটনা এটি।

কি ঘটেছিলো সেদিন?
২৪ আগস্ট ১৯৯৫, ভোর আনুমানিক চারটা। দিনাজপুরে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ইয়াসমিন। স্থানীয় কিছু মুসলিম একটি পুলিশ ভ্যানে ইয়াসমিন কে তুলে দেয় যাতে সে নিরাপদে দিনাজপুর যেতে পারে এবং ভ্যানের পুলিশদের অনুরোধ করে মেয়েটিকে পৌঁছে দেবার জন্য। কিন্তু এই পুলিশ ভ্যানই ডেকে আনে ইয়াসমিনের শেষ দিন। ১০ মাইল থেকে দিনাজপুর শহরে আসার পথে ভ্যানে থাকা তিন পুলিশ সদস্য এসআই মইনুল, কনস্টেবল সাত্তার ও অমৃত ভ্যানের ভিতরেই ইয়াসমিনকে ধর্ষণ করে এবং সেখানকার ব্রাক স্কুলের সামনে চলন্ত পিকআপ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে তাকে হত্যা করে।

ইয়াসমিনের মৃত্যুর ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় দিনাজপুরে। বিক্ষুব্ধ হাজার হাজার জনতা কোতোয়ালি থানা ঘেরাও করে। লুট হয় কাস্টমস গোডাউনসহ শহরের বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের অনেক মালামাল। জ্বালিয়ে দেয়া হয় চারটি পত্রিকা অফিস ও প্রেসক্লাব। ২৭ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা রাজপথে নেমে আসলে তাদের উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে। সামু, কাদের ও সিরাজ নিহত হয় এবং আহত হয় আরও শতাধিক ব্যক্তি। দিনাজপুরে সামলানো না গেলে ইয়াসমিন হত্যা মামলাটি স্থানান্তর করা হয় রংপুরে। রংপুর বিশেষ আদালতে ইয়াসমিন হত্যা মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিন পুলিশ সদস্যকে ফাঁসি দেয়া হয়।

এর পর থেকে প্রতি বছরে এই দিনটি “নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস” হিসেবে পালন করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। ইয়াসমিনের স্মরণে দিনাজপুরের দশ মাইল এলাকায় তৈরি করা হয়েছে ইয়াসমিন স্মরণী।

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ এর আরও সংবাদ