সীমান্তে ভূমিমাইন পুঁতে নতুন ফাঁদ পাতছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৯ই সেপ্টেম্বর ২০১৭, শনিবার  | সন্ধ্যা ০৬:২৫ এশিয়া

ই-বার্তা।। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারে ফিরে যেতে না পারে সে জন্য সীমান্তে ভূমিমাইন পুঁতে নতুন ফাঁদ পাতছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেই সাথে মাইনের ওপর জুসের প্যাকেট, কম দামি মোবাইল ফোনের সেটের মতো জিনিসও রেখে তারা। এরই মধ্যে মাইন বিস্ফোরণে এক সপ্তাহে মারা গেছে ছয় রোহিঙ্গা।

গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, কাছেই টহল দিচ্ছেন বিজিবি সদস্যরা। কাছেই নো ম্যানস ল্যান্ডে (জিরো পয়েন্ট) কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শিশুসহ নর-নারী অবস্থান করছে। অনেক রোহিঙ্গা ওই ক্যাম্পসংলগ্ন খালের পাড়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। এক বিজিবি সদস্যের ওয়্যারলেস সেটে সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, সবাই সতর্ক থাকুন, অ্যালার্ট হয়ে যান। মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের বর্ডারে এসে পদাচরণ করছে, তারা মাইন স্থাপন করছে। সতর্কবার্তায় বলা হচ্ছিল, মিয়ানমার সীমান্তে সরাসরি মিয়ানমার সেনাবাহিনী নেমে এসেছে এবং বিজিপির প্রহরায় কাঁটাতারসংলগ্ন এলাকায় মাইন পুঁতছে। এ কারণেই নো ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ছিল।

বিজিবির এক সদস্য প্রতিবেদককে আঙুল উঁচিয়ে দেখিয়ে বলেন, সাংবাদিক ভাই, দেখেন, মিয়ানমারের সীমান্তে সরাসরি সেনাবাহিনী নেমে এসেছে। তারা বাংলাদেশ বরাবর মাইন পুঁতে রাখছে। এ সময় মিয়ানমারের দিকে ক্যামেরা না ধরতেও অনুরোধ করেন বিজিবি সদস্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবির এক সদস্য বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন মতে বিনা নোটিশে সীমান্তের তিন কিলোমিটারের ভেতরে কোনোভাবেই কোনো দেশের সেনাবাহিনী সেনা পোশাকে সেনা অস্ত্র নিয়ে আসতে পারে না। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী সেসবের ধারেকাছেও নেই। তারা প্রতিক্ষণ, প্রতিদিন, প্রতিসময় যখন যা ইচ্ছা, তাই করছে। বিজিবির আরেক সদস্য বলেন, গত বৃহস্পতিবারও একই সময়ে একই স্থানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা পোশাক পরে এসে মাইন পুঁতেছে। এমনকি কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর ২৭১ কিলোমিটার অংশে ব্যাপকভাবে মাইন পুঁতে রেখেছে। বিশেষ করে যেসব পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করে থাকে সেসব পয়েন্টকে প্রাধান্য দিয়ে মাইন পোঁতা হচ্ছে।

তুমব্রু সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশি বাসিন্দা কৃষক আবুল হাসেম (৭০) বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তুমব্রু সীমান্তে আমার জমিতে ফসল ফলিয়ে আসছি। কিন্তু কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপির প্রহরায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার সঙ্গে মাইন পোঁতার কাজ করছে। এই দৃশ্য দেখে আমি প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসি।

সর্বশেষ সংবাদ

এশিয়া এর আরও সংবাদ