১৪২৩ বঙ্গাব্দদের চৈত্র সংক্রান্তি আজ


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১৩ই এপ্রিল ২০১৭, বৃহঃস্পতিবার  | বিকাল ০৩:৩৪ অন্যান্য

আজ চৈত্রসংক্রান্তি। বাংলা ১৪২৩ সালের শেষ দিন।অন্যদিকে শেষদিন ঋতুরাজ বসন্তেরও। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে কালের অতল গর্ভে হারিয়ে যাবে আরও একটি বছর। শেষ এ দিনটিকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি।

‘জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক, মুছে যাক গ্লানি’-বিদায়ী সূর্যের সামনে এ প্রণতি রাখছে আজ বাঙালি। চৈত্র সংক্রান্তি বাংলার বিশেষ লোক উত্সব। প্রধানত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব হলেও চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক বাঙালির কাছে চৈত্র সংক্রান্তি এক বৃহত্তর লোকৎসবে পরিণত হয়েছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দিনটিকে একটি পুণ্য দিন বলে মনে করে। পঞ্জিকা মতে, দিনটিকে গণ্য করা হয় ‘মহবিষুব সংক্রান্তি’ নামে। এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নদীতে বা দিঘিতে পুণ্যস্নান করে থাকেন।
নানা আচার-অনুষ্ঠান আর হালখাতার প্রস্তুতি নেওয়ার দিন আজ। চৈত্র সংক্রান্তি বাংলার লোক সংস্কৃতির এমন এক অনুষঙ্গ, যা সর্বজনীন উৎসবের আমেজে বর্ণিল। বছরের শেষ দিনে যেমন নানা আয়োজনে বর্ষকে বিদায় জানানো হয় তেমনি চৈত্রের শেষ দিনে বৈশাখ বন্দনায় মেতে ওঠে বাঙালি।

এই চৈত্র সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসে লোকৎসবের আসর। আগে গ্রাম বাংলায় এ চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে আচার-অনুষ্ঠানের অন্ত ছিল না। চৈত্র সংক্রান্তির মেলা উপলক্ষে গ্রামাঞ্চলের গৃহস্থরা নাতি-নাতনিসহ মেয়ে-জামাইকে সমাদর করে বাড়ি নিয়ে আসত। সম্পন্ন গৃহস্থরা সবাইকে নতুন জামা-কাপড় দিত এবং খাবার-দাবারের আয়োজন করত। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে লোকমেলার আয়োজন গ্রামগঞ্জেই হয় বেশি। মেলা, গান-বাজনা ও যাত্রাপালাসহ নানা আয়োজনে উঠে আসে লোকজ সংস্কৃতির নানা সম্ভার। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মেতে ওঠে পূজা-অর্চনায়।
চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান : প্রতি বছরের মত এবারও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বর্ষবরণেল পাশাপাশি বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠানের আযোজন করেছে। এ উপলক্ষে আজ বিকেল ৪টায় একাডেমির ভবনসমূহের ছাদে ঘুড়ি উৎসব ও একাডেমি প্রাঙ্গণে লাঠি খেলার আয়োজন রাখা হয়েছে। এছাড়া ৫টায় পুঁথি পাঠ, সোয়া ৫টায় পুতুলনাট্য, পৌনে ৬টায় পালা গান, সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় গম্ভীরা ও পৌনে ৭টায় রায়বেশে পরিবেশিত হবে।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আজ জাতীয় নাট্যশালায় সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় চৈত্রসংক্রান্তির বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বর্ষবিদায়ের সূচনা সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হবে অনুষ্ঠান। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও বর্ষবিদায়ের শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেবেন সাংস্কৃতিক অঙ্গণের বিশিষ্টজনেরা। বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে শিল্পীরা পরিবেশন করবেন গান। আলোচনা ও গানের ফাঁকে ফাঁকে চলবে আবৃত্তি।

এছাড়া বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী শুকনো খাবার মুড়ি-মুরকীর আয়োজনও রয়েছে।
রাজধানীতে গেন্ডারিয়ার সীমান্ত খেলাঘর আসর ও সীমান্ত গ্রন্থাগার যৌথভাবে চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। চৈত্রসংত্রান্তি উপলক্ষে ‘আঁকবো আমরা রাঙাবো গেন্ডারিয়া’ এ স্লোগানকে শিরোনাম করে গত দু’বছরের মতো এবারও বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় “আল্পনা উৎসব-১৪২৪” এর আয়োজন করেছে।

বর্ষবিদায় উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চৈত্রসংক্রান্তি উৎসবের আয়োজন করেছে সুরের ধারা। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জানান, চৈত্র মাসের শেষ বিকেলে সুরের ধারার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে প্রতিবারের মতো ‘চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব ১৪২৩’ বিদায় এবং বর্ষবরণ ১৪২৪ উৎযাপনের মূল কার্যক্রম। এবারের চৈত্র সংক্রান্তির বিষয় ‘বাংলাদেশে রবীন্দ্র’। আজ সন্ধ্যা সূর্যাস্ত থেকে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চলবে বর্ষবিদায়ের অনুষ্ঠান। পুরো অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল আই।

সর্বশেষ সংবাদ

অন্যান্য এর আরও সংবাদ