কাঁদছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর হরিমোহন স্কুলের মাঠ


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৩১শে অক্টোবর ২০১৭, মঙ্গলবার  | বিকাল ০৪:৩৮ বিশেষ প্রতিবেদন

ই-বার্তা।। জামিল উর রহমান।। কেঁদে কি হবে? কেউ কি শুনতে পাবে তোমার কান্নার আওয়াজ? কেউ কি দাঁড়াবে তোমার পাশে? কেউ কি আর তোমাকে ক্ষমা করবে? উত্তর - না। তেমন কেউ আসলে নেই যে তোমাকে রক্ষা করবে।

আমি মাঠ, আমি কথা বলতে পারিনা তাই বলে কি আমাকে মেরে ফেলা হবে? এতটুকুও ছাড় দেয়া হব না? আমার উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত সবাই হেটে যায়, লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী পাশ করে বের হয় এই মাঠ পার হয়ে। সকাল বিকেল খেলা করে সবাই আমার উপরেই । না আমি কাউকে না করছি না? আমি মাঠতো এই জন্যই আছি। কিন্ত এসবের বদলে যখন আমার উপরে কষ্ট দেয়া হয় সেটা আমি কিভাবে সহ্য করি। করিনা তাও আবার না, করেছিতো। কিন্ত আমিতো আর পারছিনা। আমার আর সহ্য করার সেই ক্ষমতা নেই। দেখুন দেখুন হ্যাঁ আপনাকে বলছি, আমার বা পাশটা , ডান পাশটা , গোলবারের জায়গাটা, বুকের মধ্যেটা? দেখতে পেয়েছেন? হ্যাঁ আমি বিদ্ধস্ত, আমি অসুস্থ, আমি প্রায় মারা যাবো। আচ্ছা আপনাকে এত অত্যাচার করলে কি আপনি বেচে থাকতে পারতেন? জানি পারতেন না। আর পারবেন ই বা কিভাবে ? আপনারাতো শুধু নিতেই জানেন ,দিতে জানেন না। কি খারাপ লাগলো? জানি লাগবে । কেন বললাম এই কথা জানেন, আপনারাতো আমাকে ব্যবহার করেছেন ।

আপনারাতো এখন ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার,প্রশাসনে কাজ করেন ,সাংবাদিক হয়ে গেছেন, কই আপনারাও তো আমাকে এতটুকু সাহায্য করলেন না? আমিতো আপনাদের মোত আরো লক্ষ লক্ষ ছাত্রদের জন্য বেচে থাকতে চায়। কিন্ত আজ? সবাই হারিয়ে গেছে। কেউ নেই। আসলে


সবাই সার্থপর। কেউ কারো জন্য নয়। আমি হয়ত চলে যাবো কিন্ত মনে রাখবেন এই আমাকে ,এই সবুজকে, এই ভালোবাসাকে আপনারা আর কখনো পাবেন না। আর হ্যাঁ আপনারা যারা ভালোবাসতে জানেন না তারা কোনদিনো সেই ভালোবাসাগুলোকেও পাবেন না। হারিয়ে ফেলবেন সবকিছু। আজ সত্যি যদি আমার বুকটা চিড়ে দেখাতে পারতাম, দেখতেন শুধুই রক্তের ঢেউ। কই আমিতো কাউকে কম দেইনি? আজকে তাহলে কেন আমাকে এত কষ্ট দেয়া হচ্ছে? আমাকে কেন মেরে ফেলা হচ্ছে? দিতে পারবেন উত্তর?

যদি কোন মাঠ কথা বলতে পারতো , মনের ভাব প্রকাশ করতে পারতো তাহলে হয়ত এক সেকেন্ডো দেরি করতো না চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার সেরা বিদ্যাপিঠের বিশাল এই খেলার মাঠ।

১৮৯৫ সালের পুরোনো সেই স্কুল হরিমোহন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়। পালাক্রমে লক্ষ লক্ষ ছাত্র বের হয়েছেন এখান থেকে। এদের মধ্যেই অনেকেই আজ দেশ চালাচ্ছেন।

এই স্কুলের সামনে রয়েছে বিশাল এক মাঠ। খেলাধুলা,ব্যায়াম,পিটিপ্যারেড এই মাঠেই হয়। কিন্ত মাঠটির অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সরকারী,বেসরকারী প্রোগ্রাম করা হচ্ছে এখানে। দিনের পর দিন বিভিন্ন মেলার নাম করে শেষ করে দেয়া হচ্ছে বিশাল সবুজ এই মাঠকে। বলতে গেলে মাঠের আর এখন তেমন কিছুই নেই। কারণ এত পরিমাণে খুড়াখুড়ি আর গর্ত করা হয়েছে যে মাঠটি মরার মত নিথর হয়ে পড়ে আছে। আর আবর্জনাতো আছেই।

বিদ্যালয়ের কিছু কিছু শিক্ষার্থী এর প্রতিবাদ করার চেষ্টা করাতেও কিছু হয়নি। একের পর এক মেলা হয়েই যাচ্ছে। যারা দায়িত্বে আছেন তারা যদি শীঘ্রই কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে মাঠটিকে আর বাচানো সম্ভব হবে না।

সর্বশেষ সংবাদ

বিশেষ প্রতিবেদন এর আরও সংবাদ