প্রচন্ড মাথা ব্যথা হলে করণীয়


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১৯শে আগস্ট ২০১৭, শনিবার  | দুপুর ১২:২৩ মেডিকেল

ই-বার্তা।। কথায় আছে, মাথা থাকলে মাথা ব্যথা থাকবেই। কখনও মাথা ব্যথা হয়নি এমন মানুষ বোধহয় পাওয়া যায়নি। অনিয়মিত ঘুম, ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি কারণে মাথায় ব্যথা হওয়া খুবই সাধারণ ঘটনা। মাথা ব্যথা খুব বিরক্তিকর ও কষ্টকর ব্যাপার তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই এসময় করণীয় কি এবং কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় চলুন তা জেনে নেই।

বিভিন্ন কারণে মাথা ব্যথা ও প্রতিকার-

*দুশ্চিন্তার কারণে মাথা ব্যথা।
এই ব্যথা সাধারণত মাথার দু’পাশেই হতে পারে। এসময় মাথায় প্রচণ্ড চাপ অনুভূত হয়। এমনকি মানসিক চাপে এই ব্যথা ঘাড়ে পর্যন্ত সংক্রমিত হতে দেখা যায়। এই ধরনের মাথা ব্যথা সপ্তাহ থেকে শুরু করে মাসব্যাপী স্থায়ী হতে পারে। দিনের যে কোন সময় এই ব্যথা বাড়তে পারে। তীব্রতাও একেক সময় একেক রকম হতে দেখা যায়। দুশ্চিন্তাজনিত মাথা ব্যথায় কখনো জ্বর থাকে না।

চিকিৎসা-
এই ধরনের মাথা ব্যথায় বেদনানাশক অষুধ খেলেই উপকার পাওয়া যায়। তবে ব্যথার পরিমাণ বেশি হলে স্বল্পমাত্রার ট্র্যাঙ্কুলাইজারও দেয়া যেতে পারে।

*মাইগ্রেন জনিত মাথা ব্যথা।
বেশিরভাগ নিয়মিত মাথা ব্যথার জন্য মাইগ্রেন দায়ি। এই ব্যথায় নারীরা বেশি কষ্ট পেয়ে থাকেন। সাধারণত কিশোর বয়সে মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা দেয়। আর অনেক ক্ষেত্রেই ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত তা স্থায়ী হয়। এই ব্যথা সাধারণত মাথার এক দিকে হয়। অবশ্য কখনও কখনও তা সমস্ত মাথায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই ধরনের মাথা ব্যথার সাথে বমি বমি ভাব হয়। অনেক সময় ব্যথা বেশি উঠলে বমিও হতে পারে। তবে এই ব্যথা মাত্র কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয়।

চিকিৎসা-
যেসব কারণে মাইগ্রেনের সমস্যা বৃদ্ধি পায়, তা পরিহার করে চলতে হবে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হিসাবে অ্যাসপিরিন বা প্যারাসিটামলের সাথে এন্টিইমেটিক ট্যাবলেট দেয়া যেতে পারে। অবশ্য সমস্যাটি দীর্ঘস্থায়ী এবং ব্যথার তীব্রতা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

*সাইনাস।
সাধারণত যাদের ঘন ঘন সর্দি ও কাশি হয় তাদের ভেতরে সাইনাসের সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। মূলত সাইনুসাইটিস থেকে এই ধরণের মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। এই ধরনের ব্যথা সর্দি কাশির সময়ে কিংবা এরপর থেকে শুরু হয়। সাইনাসের ব্যথা সকালের দিকে বেশি হয়। ব্যথাটি মুখ অথবা মাথার যে কোন নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির হয়ে থাকে। এসময় হাঁচি অথবা কাশি দিলে ব্যথা বেড়ে যায়। এমনকি মাথা নাড়লেও ব্যথাটা তীব্র হয়।

চিকিৎসা-
চিকিৎসা হিসাবে এন্টিবায়োটিক, এন্টিহিস্টামিন কিংবা নাজাল স্প্রে দেয়া হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মতে রোগ নির্ণয়ের জন্য এক্সরে বা সিটি স্ক্যান করতে হবে।

*ক্লাস্টার হেডেক।
ব্যথার পরিমাণ মাইগ্রেনের চেয়ে কম হলেও ক্লাস্টার হেডেক অবহেলার জিনিস নয়। সাধারণত মধ্য বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে এই ধরনের মাথা ব্যথা বেশী দেখা যায়। এই ধরনের মাথা ব্যথা তীব্র যন্ত্রণদায়ক হয়। এই মাথা ব্যথা সাধারণত এক চোখে এবং চোখের পিছনে হয়ে থাকে। এসময়টাতে সেদিকের চোখটি লাল হয়ে যায়। কখনও চোখ ও নাক দিয়ে পানিও পড়ে। এই মাথা ব্যথা হঠাৎ করে আসে। প্রথম ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই ব্যথার তীব্রতা বাড়ে এবং আধ ঘন্টার মধ্যে কমেও যায়।

চিকিৎসা-
এই জাতীয় মাথা ব্যাথার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াটাই উত্তম।

*চোখ জনিত মাথা ব্যথা।
যত ধরনের মাথা ব্যথা রয়েছে তার মধ্যে প্রায় ৫ ভাগই চোখের সমস্যাজনিত। দীর্ঘক্ষণ পড়াশুনা, সেলাই কিংবা কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের উপর চাপ পড়ে। ফলে মাথা ব্যথা হতে পারে। আবার বিভিন্ন চোখের রোগ যেমন, কর্ণিয়া, আইরিশের প্রদাহ, গ্লুকোমা ইত্যাদির কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে। চোখের কারণে মাথা ব্যথা সাধারণত কপালের দু’দিকে, চোখে কিংবা মাথার পিছনে হয়ে থাকে।

চিকিৎসা-
এই ধরনের মাথা ব্যথায় চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত।

সর্বশেষ সংবাদ

মেডিকেল এর আরও সংবাদ