মন ভালো করার পাঁচ সিনেমা


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৩১শে মে ২০১৭, বুধবার  | রাত ১০:২৬ সিনেমা

বিনোদন ডেস্ক ।। আজ কয়েকটি বাংলা সিনেমার নিয়ে কথা বলবো যেগুলো হয়তো অনেকের চোখ এড়িয়ে গেছে। ওপার বাংলার হলেও এপার বাংলার সিনেমাপ্রেমীদের খুব একটা হতাশ করবে বলে মনে হয় না।

হালকা হাস্যরস-বিনোদনের মন ভাল করা এই মুভিগুলো যেকোনো বয়সের দর্শকের পছন্দ ।এই কর্মব্যস্ততার ভিড়ে কেউ যদি মুভি বেছে নেয়ার দ্বন্দ্বে ভোগেন, তাহলে কিছুটা হয়তো সাহায্য করতে পারে আজকের এই লেখা।

রংমিলান্তি:
প্রথমেই যে মুভিটির কথা বলতে যাচ্ছি সেটা হল কৌশিক গাঙ্গুলির ‘রংমিলান্তি’। কৌশিক গাঙ্গুলি বর্তমান সময়ের খুব নামকরা পরিচালকদের মধ্যে একজন। তার সুনিপুণ হাতের লেখা এবং দক্ষ পরিচালনায় ‘রংমিলান্তি’ সিনেমাটি খুব সহজেই দর্শকদের মন ভোলাতে যথেষ্ট সামর্থ্য রাখে।

এই সিনেমার কাহিনী প্রেমের আবর্তে তৈরি হলেও আর চার পাঁচটি সাধারণ প্রেমের কাহিনীর মতো নয়। কিন্তু কাহিনীর উথান পতন, লেখকের লেখনি এবং পরিচালকের দক্ষ পরিচালনায় সিনেমাটি হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত। হাস্যরস আর বাস্তবতার নিরিখে চমৎকার একটি সিনেমা এই ‘রংমিলান্তি’।

নটবর নট আউট:
বাঙালি মাত্রই আমাদের কবি হওয়ার শখ। কার মনের মধ্যে নিজের কবিতা রচিত হয় নি? প্রথম প্রেমে পড়ার কবিতা, প্রথম বিরহের কবিতা, আশা ভঙ্গের কবিতা, আবার আশা জাগানোর কবিতা।

পরিচালক অমিত সেন যেন কবি হওয়ার এই ইচ্ছেটাকেই অস্থিমজ্জায় ধারণ করে হাস্যরসে নিবেদন করেছেন এক অপূর্ব চিত্রকথা। সিনেমাটির মূলচরিত্রে কে অভিনয় করেছেন মোস্তাফা প্রকাশ ও নায়িকার চরিত্রে রয়েছেন বিখ্যাত অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের নাতনি রাইমা সেন।

হ্যামলক সোসাইটি:
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের লেখা ও পরিচালনায় এক অন্যরকম প্রেমের গল্প ‘হেমলক সোসাইটি’। মানসিক ডিপ্রেশান থেকে আত্মহত্যা করতে যাওয়া কিছু লোকের সংগ্রহে নেমে পড়া এক চরিত্র ‘আনন্দ কর’ যার চিত্রায়ন করেছেন দক্ষ অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। দেখা মেলে মেঘনা চরিত্ররূপী কোয়েল মল্লিকের। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে যে মেয়ে ঘুমের ওষুধ খেয়ে মরতে যাওয়ার বাসনা করে।

পরমব্রত একটা স্কুল চালান যেখানে আত্মহত্যা করতে যাওয়া লোকগুলোকে আরেকবার সুযোগ করে দেয়া হয় জীবনকে নিয়ে নতুন করে ভাববার। চেষ্টা করা হয় আত্মহত্যার পথ থেকে নিজেদের ফিরিয়ে আনার। বিভিন্ন ক্লাস নেয়া হয় আত্মহত্যার বিভিন্ন উপায় নিয়ে।

বেশ জনপ্রিয়তা পায় এই সিনেমার প্রত্যেকটি গান। তাই কেউ যদি এখনও না দেখে থাকেন চটজলদি সময় সুযোগ ঠিক করে দেখে ফেলুন ‘হেমলক সোসাইটি’।

স্বাদে আহ্লাদে:
মনটা খারাপ, ভাবছেন একটু হালকা গোছের মুভি দেখলে মন্দ হয় না যে মুভি দেখা শেষে এক ধরনের ভাল লাগা কাজ করবে, মনে হবে কিছুটা ভাল সময় কাটানো গেল। খুব একটা পরিচিত সিনেমা নয় এটি।

কেন নারীরা শুধু স্বামীর অত্যাচার সহ্য করে যাবে? সকলেরই নিজস্ব কিছু গুণ রয়েছে। স্ত্রী মাত্রই শুধু স্বামী আর বাড়ির সকলের জন্য সেবায় নিয়োজিত থাকার জন্য জীবন বিলিয়ে দিবেন তেমন তো নয়! নিজের গুণকে চারপাশে ছড়িয়ে দিতে হয়, এটাই তো স্বাভাবিক। যা একজন নারীকে গড়ে তোলে স্বাবলম্বী হিসেবে। আর তারই সফল চিত্রায়ণ দেখা যায় এই সিনামাটিতে।

মনচোরা:
বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ কলকাতার সাহিত্যচর্চা। অনেক বলিষ্ঠ গুণী শিল্পীর খোঁজ মেলে এই সাহিত্য ভান্ডারে। আর সেই বিশাল সাহিত্য ভান্ডারে একজন পরিচিত নাম ‘শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়’।

এই লেখকটির গুণমুগ্ধ অনুসারী হলেন আরেকজন শক্তিশালী সাহিত্য ব্যক্তিত্ব সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দ্বীপ রায়।হালকা মিষ্টি প্রেমের ভিন্ন স্বাদের একটি গল্প ‘মনচোরা’।

সন্দ্বীপ রায়ের দক্ষ পরিচালনা এবং আবির ও রাইমা সেনের অনবদ্য অভিনয় নাটকটিতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। আর পরাণ বন্দোপাধ্যায়ের কথা তো না বললেই নয়। তার সুনিপুণ অভিনয় দক্ষতা সিনেমাটিতে যোগ করেছে মন ভাল করে দেয়ার আবেদন।

সিনেমা পছন্দ করে না এমন ব্যক্তি বর্তমানে খুঁজে পাওয়া বিরল। কিন্তু সব সময় উপযুক্ত সিনেমাটি পছন্দ করে নিতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়।

যারা হালকা ভাবের বাংলা সিনেমা দেখতে অভ্যস্ত তাদের জন্য এই সিনেমাগুলো কিছুটা ভাল সময় কাটাতে বেশ সাহায্য করবে তার এক জোরালো দাবি রাখা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ

সিনেমা এর আরও সংবাদ