ই-বার্তা।। ‘ডুব’ চলচ্চিত্র হিসেবে কতটা ভালো আর মন্দ এই আলোচনা যতটা না হয়েছে তারচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে ছবিটি নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জীবনী অবলম্বনে নির্মিত কিনা তা নিয়ে। যারাই ছবিটি দেখতে গিয়েছেন তাদের বেশীরভাগ মানুষ ছবিটিতে হুমায়ূন আহমেদকে খুঁজেছেন। মিল বের করার চেষ্টা করেছেন অনেক ভাবে। আর এসব হবেইবা না কেন? ছবিটির শুটিং শুরু থেকেই এই আলোচনাটা অনেক ভাবে গণমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে। গত বছরের নভেম্বরে এই আলোচনার আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছিল কলকাতার আনন্দ বাজার পত্রিকার হুমায়ূন আহমেদের চরিত্রে ইরফান? কিন্তু এত লুকোছাপা কেন শিরোনামটি। তারপর থেকে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক।

ছবিটি আসলেই কি হুমায়ূন আহমেদের জীবন কাহিনী? সেই আশঙ্কা থেকেই ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি সেন্সর বোর্ডে পাঠান শাওন। তিনি চিঠিতে অনুরোধ করেন ছবিতে যদি কোনও আপত্তিকর বিষয় থাকে, সেগুলো যেন যথাযথভাবে পরিবর্তন এবং পরিশোধন করে মুক্তি দেওয়া হয়।

সমালোচনা বাড়তেই থাকে। হুমায়ূন ভক্তরা সরব হন। এ বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ধানমণ্ডির দখিন হাওয়ায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেই সংবাদ সম্মেলনে শাওন বলেছিলেন, হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্যের তথা বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি লেখক। তিনি আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার মানে এই না, তাকে নিয়ে একটি মনগড়া কাহিনিচিত্র বানিয়ে ফেলা যাবে! হুমায়ূন আহমেদ নাম বদলে চরিত্রের অন্য যে নামই দেয়া হোক না কেন, সেই চরিত্র যদি হয় বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় লেখকের যিনি চলচ্চিত্র নির্মাণও করেন, সংসার জীবনে যার দুটি অধ্যায় আছে এবং ক্যানসার আক্রান্ত হয়েই যার জীবনাবসান হয়েছে, সেটি কার জীবন এটি বুঝতে

কোনও দর্শকের গবেষণা করার প্রয়োজন পড়ে না।

কিন্তু ছবিটির নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলছেন এটা হুমায়ূন আহমেদের জীবনী না। এরপর এক পর্যায়ে এসে সব বিতর্ক চাপা পড়ে যায়। কিন্তু গত ২৭ অক্টোবর ‘ডুব’ মুক্তি পাওয়ার পর আবার সেই একই বিতর্ক নতুন করে শুরু হয়। পাঠক সমালোচকদের সমালোচনার পর সবাই অপেক্ষা করে ছিলেন শাওন কবে ছবিটি দেখবেন। ছবিটি মুক্তির শাওনের জানিয়েছিলেন তিনি তার সুবিধামত সময়ে দেখবেন ছবিটি।

অবশেষে শাওন ছবিটি দেখেছেন এবং ছবিটি দেখে তার প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন। শাওন কলকাতার একটি অনুষ্ঠানে সময় টিভির কলকাতা প্রতিনিধিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কলকাতায় আসার আগে আমি ডুব দেখেছি। হলে গিয়ে দেখতে পারিনি। একটা স্পেশাল শোতে দেখেছি। সত্যি কথা বলি ‘ডুব’ দেখে আসলে আমার হাসি পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যদি হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী হিসেবে বলি এটা হুমায়ূন আহমেদও হয়নি। হতে পারে অন্য কেউ। কিন্তু খুব জোর করে হুমায়ূন আহমেদকে ঢোকানোর চেষ্টা চালানো হয়েছে এটা বলতে পারি। কিন্তু এটা হুমায়ূন আহমেদ না। ‘ডুব’ এ হুমায়ূন আহমেদ নেই। হুমায়ূন আহমেদ অনেক বড় মাপের জিনিস। এটা হুমায়ূন আহমেদের বায়োও না। ছবিতে আমরা যাকে দেখেছি তিনি কোনভাবেই হুমায়ূন আহমেদ না হতে পারেও না।

ঐ সাক্ষাৎকারে শাওন হুমায়ূন আহমেদ প্রসঙ্গ ছাড়াও নির্মাতা ফারুকী, নিষাদ হুমায়ূন প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন শাওন।

‘ডুব’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের তিশা, রোকেয়া প্রাচী ও ভারতের খ্যাতিমান ও জনপ্রিয় অভিনেতা ইরফান খানসহ আরও অনেকেই। ছবিটি বাংলাদেশ থেকে প্রযোজনা করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া ও ভারত থেকে প্রযোজনা করেছে এসকে মুভিজ। ছবির সহপ্রযোজক ইরফান খানও ছিলেন।