সাগরের মাঝে কুকুরের দ্বীপ
ই-বার্তা
প্রকাশিত: ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার
| বিকাল ০৩:৫৭
অন্যান্য
ই-বার্তা ।। পাকিস্তানের করাচীর উপকূলীয় একটি দ্বীপ, যেখানে থাকে না কোন মানুষ এমনকি অস্থায়ী ভাবেও মানুষের আনাগোনা হয় না। কিন্তু সেখানে থাকে কেবলমাত্র কিছু কুকুর।
স্থানীয় জেলেদের মতে অনেক বছর ধরেই ওই দ্বীপে ওই কুকুর গুলো থাকছে। তাই দ্বীপটির নাম হয়েছে ডগ আইল্যান্ড মানে কুকুর দ্বীপ।
উপকূলের কাছে দ্বীপটিতে কুকুরগুলো দিনভর ঘুরে বেড়ায়। সেখানে যেসব জেলেরা নিয়মিত মাছ ধরেন তারাই কুকুরগুলোর দেখাশোনা করেন।
এদের একজন মুনির জানান, কুকুরগুলোকে দেখাশোনার কেউ নেই বলে তিনি প্রায়ই ওদের দেখাশোনা করেন। চারিদিকে লবণাক্ত পানি থাকার ফলে এরা পান করার জন্য কিছুই পায়না। দ্বীপে মানুষের আগমন টের পেলেই কুকুরগুলো দল বেধে কাছে আসে খাবারের আশায়।
জেলে মুনির বিশ্বাস করেন কুকুরগুলোকে খাওয়ালে সৃষ্টিকর্তা তাকে এজন্য পুরস্কৃত করবেন। ওদের খাওয়ালে আল্লাহ তারও খাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। তিনি আরও বলেন "আমাদের নৌকা দ্বীপের কাছে আসতে দেখলেই কুকুরগুলো ছুটে আসে। কারণ তারা জানে আমরা তাদের কিছু না কিছু দেবো।"
কুকুরগুলো কবে কিভাবে এখানে এসেছে তা পরিষ্কার ভাবে জানা যায়নি তবে স্থানীয় জেলেরা জানান বেশ কয়েক দশক ধরেই এ দ্বীপে তারা কুকুরের দল ঘুরে বেড়াতে দেখছেন। কেউ কেউ মনে করেন এগুলো বিদেশী নাবিকদের ছেড়ে দেয়া কুকুর। আবার কেউ কেউ বলেন শহর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন স্থান থেকে বেওয়ারিশ কুকুর ধরে এ দ্বীপে ফেলে যায় রাতের অন্ধকারে।
দ্বীপটিতে পরিষ্কার পানি কিংবা খাবার না থাকায় পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জেলেদের অনেকে কুকুরগুলোকে পানি বা খাবার দিয়ে যান নিয়মিতই। এদিকে পাকিস্তানের মুসলিম জনগনের মধ্যে অনেকেই বিশ্বাস করেন কুকুর পরিচ্ছন্ন প্রাণী নয়, আর সে কারণে তাদের স্পর্শ করা উচিত নয়।
করাচী শহরে রয়েছে হাজার হাজার কুকুর, যাদের মূল পরিচয় তারা বেওয়ারিশ, তাই তাদের জন্য নেই কোন সুবিধা।
আরেকজন জেলে মুহাম্মদ জানান এসব কারণে জেলেরা অনেকেই বিশ্বাস করে এ দ্বীপের কুকুরগুলোর দেখাশোনার দায়িত্ব তাদেরই।
এখন পরিকল্পনা চলছে এই ডগ আইল্যান্ড বা কুকুরদ্বীপটিতে কিভাবে ঘরবসতি গড়ে তোলা যায়। সেটি হলে এখানে হবে বড় ধরনের গৃহনির্মাণ প্রকল্প। যদিও এ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে পরিবেশবাদীদের মধ্যে। যা নিয়ে বিরোধ চলছে জমির মালিকদের সাথে।
আর সে কারণেই এখনো পর্যন্ত কুকুরগুলোই এ দ্বীপের একমাত্র অধিবাসী।