ছবিগুলো বন্দি হোক ছবি বইয়ে, ফেসবুকের এলবামে নয় !


ই-বার্তা প্রকাশিত: ১৭ই অক্টোবর ২০১৭, মঙ্গলবার  | দুপুর ০২:৩২ দেশ

আফসারী আহমেদ অতশী।। সময় পাল্টাচ্ছে, যুগ পাল্টাচ্ছে সেই সাথে আমাদের পছন্দ অপছন্দ সবই তার সাথে পাল্লা দিয়ে বদলে যাচ্ছে। কোন একটা কাজ হয়ত আগে এক কারনে করা হত, এখন সেই একই কাজ করা হচ্ছে একদমই ভিন্ন কারনে। একটা সময় ছবি তোলা হত সেই মূহুর্তটাকে একটা ফ্রেমে বন্দি করে ফেলার জন্য। যাতে সেই সময় থেকে দশ বিশ বছর পর যখন ছবিটা দেখা হবে তখন যাতে স্মৃতিটা একদম তাজা হয়ে ওঠে। মন যাতে মূহুর্তেই হারিয়ে যায় নস্টালজিয়ার মাঝে। কিন্তু এখন আমরা বিভিন্ন যায়গায় ঘুরতে যাই, বিভিন্ন ক্যাফে তে বসে চেকইন দেই আর সাথে সেলফি তুলে আপলোড দিয়ে দেই ফেসবুকে অথবা ইন্সটাগ্রামের স্টোরিতে। সাথে সাথে হাজার হাজার মানুষ যেনে যায় আমি কোথায় আছি, কার সাথে আছি ইত্যাদি। আর বেচারা ছবিখানা কিছুক্ষনের মাঝেই হারিয়ে যায় ভার্চুয়াল জগতের চাকচিক্যের মাঝে ! খোজ পাওয়া যায়না তার আর আমরাও বেমালুম ভুলে যাই তার কথা।

আমাদের দাদা নানা এমনকি আমাদের বাবা মায়ের সময়েও তারা ছবি তুলে তা প্রিন্ট করে এ্যালবাম ভরে ফেলত। পরে কোন এক অলস দুপুরে মা, দাদী,ফুপু, খালারা মিলে আবার সেই স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসত। এলবামের ছবি গুলো দেখতে দেখতে মনে হত ঠিক যেন সেই সময় ফেরত ফেরত গেছি।সেই ছোট্ট বেলাটিতে


যখন মায়ের কোলে চড়ে তোয়ালে মোড়ানো অবস্থায় প্রথম বার বাড়ি এসেছিলাম। আবার ফিরে যাই সেই সময় যখন ছোট্ট দুই বেনী ঝুলিয়ে প্রথমবার স্কুলে গিয়েছিলাম। কতটা মমতা নিয়েই না ছবিগুলো এখনো সেসব মূহূর্তগুলো নিজের মাঝে ধারণ করে আছে।

এখন সোশ্যাল সাইটগুলোর কল্যানে সেই বোকা বোকা ছবির এলবামগুলো কোথায় চুপটি মেরে লুকিয়ে রয়েছে তার কোন হদিসই নেই। এখন যে কোন বিশেষ দিনে মানুষ ছবি তুলে সেটা ফেসবুকে পোস্ট করার জন্য। তারপর সেই বেচারা মূহুর্তগুলো বন্দি হয়ে যায় পিসির কোন এক ফোন্ডারে অথবা ফেসবুকের কোন এক কোনায় ! সেইসব ছবিগুলোর দিকে তাকালে কেন যেন সেই মায়া মায়া ভাব টা আর চোখে পড়ে না যা পুরোনো দিনের সাদা কালো এক খান প্রিন্ট করা ছবির দিকে তাকালে চোখে পড়ে ।

ছবি তুলে সেটা ওয়াশ করে ফটো এলবামে তুলে রাখার মধ্যে যে ছোট ছোট ভালোলাগা কাজ করে সেটা হালজামানার ফটোশুট বা সেলফিতে কখনো পাওয়া যাবে না । প্রত্যেকটি ছবি একেকটি গল্প আর ছবির এলবাম একটা বই যা সেই টুকরো গল্পগুলোকে নিজের মধ্যে পরম যত্নে ধারন করে।

আশা করি এমন দিন আবারো আসবে যখন ফেসবুকে দেওয়ার জন্য না ছবি তোলা হবে সেই স্পেশাল মুহুর্তগুলোকে,সেই গল্পগুলোকে ছবির বইয়ে কয়েদ করে রাখার জন্য।

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ এর আরও সংবাদ