আসুন, টেকনোলজিকে চ্যালেঞ্জ করি


ই-বার্তা প্রকাশিত: ২৪শে অক্টোবর ২০১৭, মঙ্গলবার  | দুপুর ০১:৪০ দেশ

ই-বার্তা।। এরকম একটা দিনের কথা ভাবুন তো, যেদিনটি আপনি কোনরকম টেকনোলজি ছাড়া কাটাবেন। না মোবাইল ফোন, না ইন্টারনেট এমনকি ইলেকট্রিসিটিও না। কেমন যাবে আপনার দিনটি?

ধরুন সকালে আপনার ঘুম ভাঙলো পাখির ডাকে। অথবা সকালের রোদ চোখে পড়ে। ঘুম ভেঙেই মোবাইল ফোনে সময় না দেখে আপনি বাইরের আলো দেখে বোঝার চেষ্টা করলেন সকাল কখন হয়েছে। ফেসবুকে একটু ঘুরে না আসলে যার দিনটাই শুরু হয়না, সেই আপনি দিন শুরু করলেন বারান্দায় বসে এক কাপ চা এর সাথে। ইন্সট্রাগ্রামে সেলফি পোস্ট না করে হাতে নিলেন একটা গল্পের বই। অলসভাবে পাতা উল্টাতে থাকলেন। বাবা-মার ঘর থেকে টেলিভিশনের আওয়াজ না পেয়ে শুনতে পেলেন আপনার মা কোন একটি রবীন্দ্র সংগীত গুনগুন করছে। আজ বাবা-মা কে সকালে একটু চমকে দেয়া যাক। আপনি নিজেই চা বানিয়ে নিয়ে চলে গেলেন বাবা-মার ঘরে। লাইট জ্বালানোর বদলে সরিয়ে দিলেন জানালার পর্দা। খুলে দিন জানালার কাচ।
সময়টা শুধুই আপনাদের। প্রাণ খুলে গল্প করুন পরিবারের সাথে। সেখানে ভার্চুয়াল জগতের কোনকিছুরই ছায়া নেই।

সত্যি বলতে এটাই বাস্তব জগত। টেকনোলজির কল্যাণে আমরা প্রাকৃতিক উৎসগুলোকে ভূলতে বসেছি। এখন প্রতিটি বাড়িতে দিনের বেলাতেও লাইট জ্বলে। প্রকৃতির সব থেকে বড় উপহার সূর্য্যের আলোকে আমরা ঘরে ঢুকতে দেইনা। মানুষ নিজেদের পরিবারের সাথে গল্প করার বদলে ভার্চুয়াল বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়। আসলে কতটা প্রাণ থাকে সেই “LOL” এ? রেস্টুরেন্টে বসে খাবারটার স্বাদ নেই কতজন? গ্রাণ নেই কতজন? বরং শুধুই ডেকোরেশনের দিকে মনযোগ থাকে আমাদের। তার থেকেই বেশি মনোযোগ থাকে কত সুন্দর করে খাবারটির ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়া যায়।

টেকনোলজি, বিশেষ করে ইন্টারনেট যেমন পুরো জগতকে আমাদের হাতের মুঠোয় করে দিয়েছে, তেমনি দূরে ঠেলে দিয়েছে প্রকৃতিকে। চলুন আমরা একদিনের চ্যালেঞ্জ নেই। ঘুম থেকে ওঠা এবং ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত একটি গোটা দিন আমরা প্রকৃতির সাথে কাটাই, টেকনোলজির সাথে নয়। প্রকৃতি আমাদের যা দিয়েছে তার সাথে সময় কাটাই বরং মানব সৃষ্টি জড় বস্তু ও ভার্চুয়াল জগতের নয়। বৃষ্টি হলেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কোন একটা লেটেস্ট সিনেমা দেখতে না বসে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখি বৃষ্টির ফোঁটাগুলোকে। সময় দেই প্রকৃতিকে। প্রকৃতি উজার করে যা আমাদের কাছে ঢেলে দিয়েছে তার স্বাদ নেই। প্রকৃতির ভালোবাসাকে গ্রহণ করি। আর ভার্চুয়াল জগতের রসকষহীন জগতকে সারা দিনরাতের সঙ্গী না করি। যতটুকু দরকার ততটুকুই ব্যবহার করি টেকনোলজিকে।

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ এর আরও সংবাদ