৪২ বছর পরে কবরে খুঁড়ে সন্তানের লাশ পেলেন না মা


ই-বার্তা প্রকাশিত: ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০১৭, শনিবার  | বিকাল ০৪:০৮ ইউরোপ

ই-বার্তা ।। লিডিয়া রিড, বয়স ৬৮ বছর। বাস করেন স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় আর দুই সন্তানের মা তিনি। ১৯৭৫ সালে প্রসবের সময়ই হারিয়েছিলেন আর এক সন্তানকে, জানতেন সন্তান মারা গেছে।

সাল ১৯৭৫, রিডের বয়স তখন ২৬ আর ছিলেন ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। হঠাৎ প্রসববেদনা শুরু হওয়ায় তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল স্থানীয় হাসপাতালে। পরে তার অস্ত্রপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম হয়। সন্তানের নাম রাখা হয়েছিল গ্যারি।

চিকিৎসকরা রিডকে বলেন, গ্যারির শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ রাখা হয়েছে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে। দিন কয়েক পরে রিডকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু গ্যারি তখন ও থাকে লাইফ সাপোর্টে।

রিডের জানান, গ্যারিকে ভালো করে দেখতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি তাকে। এর পরেই রিডকে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, গ্যারির শরীরের বেশির ভাগ অঙ্গই কোনো কাজ করছে না। রিড অনুমতি দিলে খুলে দেওয়া হবে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম। পরে রিডকে জানানো হয় গ্যারির মৃত্যু হয়েছে।

নিজের হাতে বয়ে নিয়ে যান সন্তানের কফিন। তখনও সন্দেহ হয়েছিল রিডের। কারন কফিন ছিল অনেক হালকা। তখনও তাকে বোঝানো হয় তার মানসিক স্বাস্থ্যের কথা। এরপর ১৯৭৫ সাল থেকে প্রতি সপ্তাহে মৃত সন্তানের সমাধিতে ফুল রেখে যান রিড।

১৯৯৯ সালে স্কটল্যান্ডে শিশু অঙ্গ পাচারের বিশাল এক চক্রের বিষয় সামনে আসে। এদের সঙ্গে বেশ কিছু হাসপাতালের যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। সন্দেহ হওয়ায় রিড এবং আরও একজন যোগাযোগ করেন হাসপাতালের সঙ্গে। সেখান থেকে তাদের জানানো হয়, তেমন কোনো ঘটনা তাদের শিশুদের সঙ্গে ঘটেনি। সংশয় কাটেনি রিডের।

একের পর এক হাসপাতালের সঙ্গে পাচার চক্রের নাম জড়িয়ে পড়ায় রিড আবেদন করেন গ্যারির কফিন পরীক্ষার। অবশেষে সেই আবেদনে সাড়া দেয় আদালত। দিন কয়েক আগে কফিন তুলে পরীক্ষা করে হতবাক হয়ে যান রিড। কবরে গ্যারিকে সমাধিস্থই করা হয়নি।

গ্যারি জীবিত! এমন প্রশ্নে দ্বিধান্বিত রিড। রিডের মতো অসংখ্য মায়ের এখন একই প্রশ্ন-তাদের সন্তানরা মারা গিয়েছিল, নাকি তাদের পাচার করা হয়েছে! এসব প্রশ্নের জবাব পেতে আপাতত আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে অসংখ্য সন্তান হারা মায়ের।

সর্বশেষ সংবাদ

ইউরোপ এর আরও সংবাদ